মহাসড়কের জমি জাল করে নিয়েছিলেন ১৫ কোটি টাকার ঋণ!

মহাসড়কের জমি জাল করে নিয়েছিলেন ১৫ কোটি টাকার ঋণ!
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : জালিয়াতির মাধ্যমে রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের একাংশের জমির মালিক হন গোলাম ফারুক নামে এক ব্যক্তি। পরে জমি বন্ধক রেখে বেসরকারি একটি ব্যাংক থেকে নেন ১৫ কোটি টাকার ঋণ। ঋণ পরিশোধ না করায় মহাসড়কের ওই অংশের জমি নিলামে তোলে ব্যাংক। শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব এ তথ্য জানিয়েছে। র‍্যাব বলছে, গোলাম ফারুক নামে ওই ব্যক্তি মাত্র ৩০ হাজার টাকায় ওই জমি কিনে নিজের নামে নিবন্ধন করেন। এতে সাবরেজিস্ট্রি অফিস এবং ভূমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তারা তাঁকে সহায়তা করেন। ওই জমি সরকারি সংস্থা সড়ক ও জনপথ বিভাগের। রাজধানীর বাড্ডা থানায় দায়ের করা একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) উত্তরা থেকে গোলাম ফারুক এবং তাঁর সহযোগী ফিরোজ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। জিজ্ঞাসাবাদে গোলাম ফারুক উত্তরার আজমপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের একটি অংশ ক্রয়, নিবন্ধন ও ঋণ নিয়ে আত্মসাতের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৮টি মামলা রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন জানান, উত্তরার আজমপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ওই অংশের জমি অধিগ্রহণ করা হয় ১৯৪৮ সালে। ২০০৬ সালে ওই জমির ভুয়া দলিল তৈরি করেন গোলাম ফারুক। ২০১০ সালে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে ওই জমি নিজের স্ত্রীর নামে কিনে আরেকটি ভুয়া দলিল তৈরি করেন গোলাম ফারুক। ওই বছরই স্ত্রীর কাছ থেকে জমিটি নিজের নামে করে নেন গোলাম ফারুক। মূলত ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করতেই গোলাম ফারুক জালিয়াতি করেছেন। র‌্যাব কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন বলেন, জালিয়াতি করে নিজের নামে নিবন্ধন করা মহাসড়কের জমি বন্ধক রেখে একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ১৫ কোটি টাকার ঋণ নেন ফারুক। ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ না করায় ২০১৩ সালে ব্যাংক ওই জমি নিলামে বিক্রির নোটিশ জারি করে। কিন্তু সরেজমিনে ব্যাংক দেখতে পায় ওই জমিটি সড়ক ও জনপথের। তখন গোলাম ফারুক আবারও জালিয়াতি করে বন্ধক রাখা জমির দাগ নম্বর পরিবর্তন করে পাশের ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির দাগ নম্বর উল্লেখ করে ভ্রম সংশোধন দলিল করেন। ব্যাংক সেই জমিতে বন্ধকি সম্পত্তির সাইনবোর্ড স্থাপন করতে গেলে জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে।