মুক্তিযুদ্ধকে ভুলে যেতে ছাত্ররা রক্ত দেয় নি : কালাম আঝাদ

মুক্তিযুদ্ধকে ভুলে যেতে ছাত্ররা রক্ত দেয় নি : কালাম আঝাদ

সম্পাদকীয় মত, বাঙলার কাগজ : বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা বাংলা ভাষাকে মাতৃভাষা রূপে পেয়েছি; একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি, একটি মানচিত্র, একটি পতাকা এবং একটি জাতীয় সঙ্গীত পেয়েছি; স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা গণতন্ত্র ফিরে পেয়েছি; আর সর্বশেষ চব্বিশের আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা নতুন, স্বচ্ছ গণতন্ত্রের দিকে ধাবিত হচ্ছি। লক্ষ্য বাংলাদেশকে সংস্কার করে দুর্নীতিমুক্ত এবং সুষম উন্নয়নের দেশ গড়া; যেখানে বৈষম্য থাকবে না। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার উঠেপড়ে লেগেছে। অথচ ছাত্ররা কি বুক পেতে দিয়েছে, বুকের রক্ত দিয়েছে, এ কারণে? না, তাঁরা সুন্দর একটি বাংলাদেশ, বৈষম্যমুক্ত একটি বাংলাদেশ, অনিয়ম এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি বাংলাদেশ দেখতে বুকের রক্ত দিয়েছে। আমি মানি, আওয়ামী লীগের গত চার আমলে (পূর্ণ ৩ আমল, অপূর্ণ ১ আমল) জিয়াউর রহমানকে যথাযথভাবে সম্মান দেওয়া হয় নি। তাই বলে আমরা ৭ মার্চকে ভুলে যাবো? দেখা যাবে, কয়েকদিন পর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতাও কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে, সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করা হচ্ছে। তাহলে কি এমন বাংলাদেশ আমরা কখনো চেয়েছিলাম? অতীত বাংলাদেশে ক্ষমতায় গিয়ে যাঁরাই অতিরঞ্জিতভাবে ক্ষমতাকে অপব্যবহার করেছে, তাঁরাই নিকট ভবিষ্যতে বা ভবিষ্যতে বিপদে পড়েছে। নাহিদ ইসলামদের তো অনেক কম বয়স, তাঁরা ছাত্রদের রক্তে পা দিয়ে ক্ষমতায় গিয়ে, ছাত্রদের চাওয়া ভুলে গিয়ে নিজেদের মতো যা ইচ্ছে, তাই করলে ক্ষমতায় থাকাকালেই তাঁদেরকে আন্দোলনের মুখে, বিক্ষোভের মুখে পড়তে হবে। আমাদেরকে ৭ মার্চকে যেমন সম্মান দিতে হবে, তেমনি বঙ্গবন্ধুকে সম্মান দিতে হবে, তেমনি সম্মান দিতে হবে জিয়াউর রহমানকেও। বায়ান্নকে ভুলে গেলেও চলবে না। মোটকথা, চব্বিশের ছাত্ররা যে কারণে রক্ত দিয়েছিলেন, সে উদ্দেশ্য হাসিল না হলে, তাঁরা আন্দোলনের পথ থেকে কখনোই সরবেন না। এমন হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অমঙ্গল বেশি দূর নয়।

কালাম আঝাদ, সম্পাদক; বাঙলার কাগজ, ইতালি।