নবান্নের আয়োজন ঘরে ঘরে

নবান্নের আয়োজন ঘরে ঘরে
ডন সংবাদদাতা, রংপুর : রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ধানকাটা পুরোদমে শুরু হয়েছে। সোনালী ফসল ঘরে তুলে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। ঘরে ঘরে চলছে নবান্নের আয়োজন। উপজেলার বিভিন্ন ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা ধান কাটতে ব্যস্ত। কৃষাণীরাও উঠানে ধান ঝাড়তে ব্যস্ত। এ বছর প্রকৃতির বিরূপ প্রভাব বিশেষ করে বিভিন্ন পোকা-কামড় ও রোগের প্রকোপ সত্ত্বেও আমনের ভাল ফলনে আশাবাদী কৃষকেরা। উপজেলা কৃষি অফিসও ভালো ফলনের কথা বলছে। উপজেলার গজঘন্টা ইউনিয়নের কুঠিরপাড় গ্রামের কৃষক সোবহান আলী জানান, তিনি ইতোমধ্যে ৭ বিঘা জমির ধান কেটেছেন। ফলন খুবই ভালো হয়েছে বলে জানান। ওই গ্রামের মকছুদার রহমান বললেন- বন্যা, অতিবৃষ্টি ও পোকা-কামড়ের আক্রমণ হলেও শেষ মুহূর্তে বৃষ্টি হওয়ায় ফলন ভালই হয়েছে। জয়দেব গ্রামের কৃষক আব্দুল আন্নান বলেন, এ বছর ফলন ভালো, দামও ভালো। আমন ধান কাটাকে কেন্দ্র করে শ্রমিকরাও ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। বর্তমানে বাজারে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা মন দরে মোটা ধান বিক্রি হচ্ছে। এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উৎপাদন খরচ কিছুটা বেড়েছে। তা ছাড়া গত বছরের চেয়ে এ বছর মজুরির হার অনেকটা বেশি। এক বিঘা জমির ধান কাটতে বর্তমানে প্রায় ২ হাজার টাকা নিচ্ছে। এ অবস্থায় চরম বেকায়দায় পড়েছেন কৃষকরা। ধারদেনা করে হলেও আমন চাষে কৃষকেরা এ বছর বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেন। তুলনামূলকভাবে আমন মৌসুমে উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা আমন চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েন। সেই সোনালী স্বপ্ন এখন ঘরে তুলছেন কৃষকেরা। কৃষাণীরাও ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। হতাশা-কষ্ট ভুলে চোখে মুখে যেনো হাসির ঝিলিক। ঘরে ঘরে চলছে নবান্নের উৎসব। তৈরি হচ্ছে নতুন ধানের পায়েস-পিঠা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ১৯ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, প্রকৃতির বিরূপ প্রভাব সত্ত্বেও এ বছর আমনের ফলন খুবই ভালো হবে। শেষ বৃষ্টিটা ধানের জন্য এ বছর আশীর্বাদ। ‘তা ছাড়া দামও এ বছর ভালো।’