মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে প্রাধান্য দিয়ে মুদ্রানীতি ঘোষণা

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে প্রাধান্য দিয়ে মুদ্রানীতি ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাজারে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে প্রাধান্য দিয়েই এ মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান ভবনের ৫ম তলায় জাহাঙ্গীর আলম সম্মেলন কক্ষে এ মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরেরা, বিএফআইইউ’র প্রধান কর্মকর্তা, চিফ ইকোনোমিস্ট, গবেষণা বিভাগের নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও সহকারী মুখপাত্ররা।

মূল্যস্ফীতির চাপ সামাল দেওয়ার চলমান উদ্যোগের মধ্যে বাজারে অর্থের জোগান আরও কমাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক; এর অংশ হিসেবে নীতি সুদহার আরও এক দফা বাড়িয়ে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্য ‘সতর্ক ও সঙ্কুলনামুখী’ মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছে।

এ পরিবর্তনের ফলে এক দিন মেয়াদী রেপোর (পুনঃক্রয় চুক্তি) সুদহার ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে ৮ শতাংশ হয়েছে।

এবার বিশেষ রেপো সুদহারে (স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি-এসএলএফ) নীতি সুদহার করিডোরের উর্ধ্বসীমা ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে, বর্তমানে তা ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

সুদহার করিডোরের নিম্নসীমা রিভার্স রোপো সুদহার (স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি-এসডিএফ) বিদ্যমান ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে সাড়ে ছয় শতাংশ করা হয়েছে।

নীতি সুদহারের ঊর্ধ্বসীমা ও নিম্নসীমার মধ্যে ব্যবধান ২০০ শতাংশ পয়েন্ট থেকে কমিয়ে ১৫০ শতাংশ পয়েন্টে নামিয়ে আনা হয়েছে। অর্থাৎ নীতি সুদহার ৮ শতাংশের সঙ্গে সর্বোচ্চ ১৫০ বেসিস পয়েন্ট যোগ করে এসএলএফ সুদহার ও নিচে ১৫০ বেসিস পয়েন্ট বিয়োগ করে এসডিএফ সুদহার নির্ধারণ করা হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, চাহিদাজনিত মূল্যস্ফীতির চাপ প্রশমন, বিনিময় হারের চাপ নিয়ন্ত্রণ, সরকারের কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে প্রয়াজনীয় অর্থের সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী খাতে ঋণ সরবরাহ নিশ্চিত করার বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে মুদ্রানীতিতে। তবে ৪ শতাংশের ব্যাংক রেটে পরিবর্তন আনা হয় নি।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধ অর্থাৎ জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে চাহিদা কমাতে ও দাম নিয়ন্ত্রণে সংকোচনমূলক নীতি ধরে রেখেছিলো বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই হিসাবে, ঋণের সুদ বাড়াতে পলিসি রেট বা রেপো রেট বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়। এর আগে, গত জুনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পলিসি রেট বাড়িয়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ করে, যা জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে।

এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক ছয় মাসের মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল (স্মার্ট) চালু করে, এজন্য আগের ৯ শতাংশ সুদহারের সীমা তুলে নেওয়া হয়। এরপর থেকে বাজারে অতিরিক্ত তারল্য কমে যাওয়ায় সুদের হার বাড়তে থাকে।

দেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যতম প্রধান কাজ। গত ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে ও আগামী জুনের মধ্যে তা ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের।