অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি বেড়েছে ১২.২৮ শতাংশ
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ১ দশমিক ২৪ শতাংশ কমে গেছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যের ভিত্তিতে বিজিএমইএ বলছে, গত ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমা এ বাজারে ১ হাজার ১৩৬ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই পরিমাণ ছিলো ১ হাজার ১৫০ কোটি ডলার। তবে আশার আলো দেখিয়েছে অপ্রচলিত বাজার। এ বাজারে পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ১২ দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪৫৪ কোটি ডলার, যেখানে আগের বছর প্রথমার্ধে এর পরিমাণ ছিলো ৪০৪ কোটি ডলার। এর মধ্যে জাপানে ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ায় ২৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় ১৯ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ বেড়েছে রপ্তানি।
বিজিএমইএ’র পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, অপ্রচলিত বাজার এবং সেখানে আমাদের নতুন প্রোডাক্টে ফোকাস করায় আমরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। তবে খারাপের মধ্যেও অন্য দেশের তুলনায় আমরা ভালো করেছি।
বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, অস্ট্রেলিয়াসহ অপ্রচলিত বাজারগুলোতে বাংলাদেশ ভালো করছে। তবে সার্বিকভাবে বছরের প্রথমার্ধে পোশাক রপ্তানিতে ১ দশমিক ৭২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখেছে বাংলাদেশ। গত ছয় মাসে প্রায় ৪৫৪ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যেখানে আগের বছর এর পরিমাণ ছিলো ৪০৪ কোটি ডলার।
বিজিএমইএ সূত্র বলছে, ইইউতে খুচরা বিক্রি বেড়েছে। ফলে ক্রেতাদের হাতে থেকে যাওয়া স্টক কমেছে। আগামীতে ইউরোপে অর্ডার বাড়বে। পোশাক শিল্পের স্বার্থে গ্যাস সঙ্কট নিরসনের পাশাপাশি কাস্টমস ও বন্ড সেবা সহজীকীকরণের দাবি জানিয়েছে বিজিএমইএ।
বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন কারণে ইইউ’র ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। ২০২২ সালে তাঁদের ইমপোর্ট অনেক ভালো করেছিলো, সে সময়ের কিছু ইনভেন্টরি থেকে গিয়েছিলো, স্টক থেকে গিয়েছিলো। চায়না, ভিয়েতনাম সবার নেগেটিভ গ্রোথ। এটা শুধু যে বাংলাদেশের তা না। বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি আসে তৈরি পোশাক থেকে। আর এসব তৈরি পোশাকের ৪০ শতাংশ যায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ দেশে।
ইপিবির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথমার্ধে স্পেনে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ, ফ্রান্সে ২ দশমিক ১৫ শতাংশ, নেদারল্যান্ডসে ৯ দশমিক ১১ শতাংশ এবং পোল্যান্ডে ১৯ দশমিক ১৪ শতাংশ। অন্যদিকে জার্মানিতে ১৭ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, ইতালিতে ৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং বেলজিয়ামে ৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ কমেছে।
বাংলাদেশের জন্য বৃহত্তম বাজার জার্মানিতে রপ্তানি হ্রাসকে ইউরোপে প্রবৃদ্ধি কমার মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত ছয়মাসে জার্মানিতে ২৮৬ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যেখানে আগের অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিলো ৩৪৫ কোটি ডলার।
চলতি বছরের প্রথমার্ধে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ কমে নেমেছে ৪০৩ কোটি ডলারে, যেখানে আগের বছরে একই সময়ে এই পরিমাণ ছিলো প্রায় ৪২৮ কোটি ডলার।
উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডায় পোশাক রপ্তানি কমেছে ৪ দশমিক ১৬ শতাংশ। সবশেষ ছয়মাসে সেখানে রপ্তানি হয়েছে ৭৪ কোটি ডলারের পণ্য, যেখানে আগের বছর এই পরিমাণ ছিলো ৭৭ কোটি ডলার। একই সময়ে যুক্তরাজ্যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ২৪ শতাংশ, সেখানে ২৭১ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। আগের বছর এ সময়ে রপ্তানি হয়েছিলো ২৩৯ কোটি ডলার।