প্রধানমন্ত্রী : রাসেলের মতো ভাগ্য যেনো আর কোনও শিশুর না হয়

প্রধানমন্ত্রী : রাসেলের মতো ভাগ্য যেনো আর কোনও শিশুর না হয়
ডন প্রতিবেদন : শেখ রাসেল দিবসের অনুষ্ঠানে ভাইয়ের জন্য হাহাকার ঝরলো প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার কণ্ঠে; এমন ঘটনা আর যেনো না দেখতে হয়, দেশবাসীর কাছে তাও চাইলেন তিনি। তিনি বলেছেন, ‘একটা ফুল পূর্ণাঙ্গভাবে ফোটার আগেই অকালে ঝরে যাবে, এটা কারও কাম্য নয়। আমাদের দেশের আর কোনও শিশুর জীবনে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে।’ ‘আমরা এ রকম চাই না, বরং চাই বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হবে। প্রত্যেকটি শিশুর জীবন এই দেশে অর্থবহ এবং সুন্দর হবে। কেউ অকালে ঝরে যাবে না।’ সোমবার (১৮ অক্টোবর) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে ‘শেখ রাসেল দিবস-২০২১’ এর উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর খুনিরা তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদেরসঙ্গে তাঁর ছোট ছেলে ১১ বছরের শেখ রাসেলকেও হত্যা করেছিলো। বিদেশে থাকায় তখন প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। শেখ রাসেলের জন্ম ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর। তাঁর জন্মদিন এবারই প্রথম ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে পালন হচ্ছে। দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘শেখ রাসেল দীপ্ত জয়োল্লাস, অদম্য আত্মবিশ্বাস’। রাসেলকে হত্যার ঘটনা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেদিন রাসেল মায়ের কাছে যাবো বলে কান্না করছিলো। তাঁকেও হত্যা করা হলো। আমার একটাই প্রশ্ন, এ শিশুটির কী অপরাধ ছিলো?’ ’৭৫ এ শিশু রাসেলসহ জাতির পিতার পরিবারের সদস্যদের হত্যা, পরবর্তীতে ১৯টি ক্যু এবং ক্যু নিবৃত্ত করার নামে সামরিক অফিসার হত্যা, ২০০১ পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে এবং ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনে সহিংসতার কথা বলেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই বাংলাদেশে আর কোনোদিন যাতে হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্র না হয়। ঘাতকের বুলেটে আর কোনও শিশুকে যাতে এভাবে জীবন দিতে না হয় এবং দেশের অগ্রগতি যাতে থেমে না যায়, সে ব্যাপারে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহবান জানাচ্ছি।’ দেশের ভবিষ্যত শিশুদের দিকে মনোযোগী হওয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটাই আহ্বান জানাবো, এই শিশুদের নিরাপত্তা দেওয়া, ভালবাসা দেওয়া, সুন্দরভাবে গড়ে তোলা, তাঁদের জীবনকে সার্থক এবং অর্থবহ করা-এই কর্তব্য পালনই যেনো সকলের আদর্শ হয়।’ তিনি বলেন, জাতির পিতা ১৯৭৪ সালেই শিশু নিরাপত্তার জন্য আইন প্রণয়ন করে যান। কিন্তু দুর্ভাগ্য ঘাতকের হাতে তাঁরই সন্তানদের হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়। শেখ হাসিনা বলেন, শিশুদের নিরাপত্তা দিতে আওয়ামী লীগ সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ‘আওয়ামী লীগ সরকার একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চায়। যে দেশে কোনও অন্যায়-অবিচার থাকবে না, মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচবে।’ প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিশুদের দোয়া ও আশীর্বাদ জানিয়ে তাঁদের মনযোগ দিয়ে লেখাপড়া করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘অন্য সম্পদ চুরি হতে পারে বা হারাতে পারে। কিন্তু লেখাপড়া এবং শিক্ষা এটা এমন একটা সম্পদ, যেটা কেউ কারও কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারে না।’ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলমও বক্তব্য দেন।