শুক্রবারের বিশেষ : কুমিল্লার ধর্মসাগরে ৪০ কেজি ওজনের ব্ল্যাক কার্প।

শুক্রবারের বিশেষ : কুমিল্লার ধর্মসাগরে ৪০ কেজি ওজনের ব্ল্যাক কার্প।
ডন প্রতিবেদক, কুমিল্লা : কুমিল্লা নগরের ঐতিহ্যবাহী ধর্মসাগর দিঘিতে বড়শিতে ধরা পড়েছে ৪০ কেজি ওজনের ব্ল্যাক কার্প। বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে আটটার দিকে দিঘির পশ্চিম অংশে ওই মাছ ধরা পড়ে। মুহূর্তে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে উৎসুক মানুষ মাছটি দেখতে আসেন। খবর পেয়ে স্থানীয় সাংসদ আ ক ম বাহাউদ্দিনও ওই মাছ দেখতে আসেন। একপর্যায়ে মৎস্যশিকারি সাংসদকে ওই মাছ উপহার দেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটায় কুমিল্লা নগরের প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড় ও বাদুড়তলা এলাকা ঘিরে ছোটরা মৌজায় অবস্থিত ধর্মসাগর দিঘিতে শখের বশে বড়শি ফেলেন ব্যবসায়ী জায়েদ উল্লাহ। রাত সাড়ে আটটার দিকে হঠাৎ তাঁর বড়শি নিয়ে টানাটানি শুরু করে মাছ। তিনি কোনোভাবেই বড়শিতে মাছটি ধরে রাখতে পারছেন না। পরে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে পাড়ের কিনারায় এনে দেখতে পান বিশাল এক ব্ল্যাক কার্প। এ খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে ফেসবুকে লাইভ করেন। তখন উৎসুক জনতা দিঘির পশ্চিম-উত্তর কোণে সেটি দেখতে যায়। কুমিল্লা-৬ (আদর্শ সদর, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন ও ময়নামতি সেনানিবাস এলাকা) আসনের সাংসদও ওই মাছ দেখতে যান। পরে ওই ব্যবসায়ী তাঁকে মাছটি উপহার দেন। ব্যবসায়ী মো. জায়েদ উল্লাহ বলেন, ‘সাংসদ মহোদয়কে মাছটি দিতে পেরে আমি ধন্য।’ এ সময় সাংসদ আ ক ম বাহাউদ্দিন বলেন, ‘ধর্মসাগর দিঘি কুমিল্লার ঐতিহ্য। এ দিঘিতে আরও বড় মাছ আছে।’ দিঘির ইজারাদারদের একজন কামরুজ্জামান মারুফ বলেন, ‘মাছ চাষের জন্য আমরা ৩০ জন ৩ বছরের জন্য ৪৫ লাখ টাকা দিয়ে ধর্মসাগর দিঘি ইজারা নিয়েছি। প্রতিবছর এ দিঘিতে মাছ ফেলা হয়। এ দিঘির পানি শুকানো বা অপসারণ করে মাছ ধরা যায় না। জাল দিয়ে ও বড়শি ফেলে মাছ ধরতে হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আমরা যাঁরা ইজারা নিয়েছি, তাঁরা শখের বশে বড়শি ফেলি। এরইমধ্যে জায়েদ উল্লাহর বড়শিতে ধরা পড়ে ৪০ কেজি ওজনের ব্ল্যাক কার্প। ওই খবর পেয়ে সাংসদ মাছটি দেখতে আসেন। পরে তাঁকে মাছটি উপহার দেওয়া হয়। তিনি উপহার নিতে চান নি। দাম দিতে চেয়েছেন। আমরা সবাই মিলে তাঁকে সেটি দিয়েছি। এর আগে এ দিঘিতে ৩৯ কেজি ওজনের ব্ল্যাক কার্প মাছ ধরা পড়ে।’ কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির সদস্য আবদুস সোবহান বলেন, ‘ধর্মসাগরপাড়ে হাঁটছিলাম। হঠাৎ হইচই শুনে পাড়ের কাছে গিয়ে দেখি বিশাল মাছ। হাতে নিয়ে দেখলাম। এ ধরনের বড় মাছ সাধারণত জলাশয়, নদীতে ধরা পড়ে। বড়শিতে এত বড় মাছ ধরা পড়া খুব একটা শুনি নি।’ ইতিহাসবিদ আহসানুল কবীর বলেন, ১৪৫৮ সালে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মহারাজা এ অঞ্চলের মানুষের পানির চাহিদা মেটাতে ২৩ দশমিক ১৮ একর জমিতে এই বিশাল দিঘি খনন করেন। রাজা ধর্মমাণিক্যের নামানুসারে এই দিঘির নাম করা হয় ধর্মসাগর। এটি কুমিল্লার অন্যতম পর্যটন স্পটও। ইট-কংক্রিটের শহরের দিঘিতে এ মাছ ধরা পড়েছে। এটা একটি পুরোনো মাছ। https://www.youtube.com/watch?v=AJSVlZ9gn48