ডন প্রতিবেদন : এখন পর্যন্ত রেকর্ড বইয়ের তথ্যে এ বছরের জুলাই মাসটি ছিলো বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণতম মাস- এমনটাই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি কেন্দ্রীয় বৈজ্ঞানিক ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থাটির তথ্যের বরাতে বিবিসি জানায়, এই জুলাইয়ে স্থলভাগ ও সমুদ্রপৃষ্ঠের সমন্বিত তাপমাত্রা ২০ শতকের গড় তামপাত্রা ১৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চেয়ে শূন্য দশমিক ৯৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।
১৪২ বছর আগে আবহাওয়ার তথ্য সংরক্ষণ শুরুর পর এটাই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আগের রেকর্ডটি ছিলো ২০১৬ সালে এবং ২০১৯ সালেও ওই একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, জলবায়ু পরিবর্তনের দির্ঘ মেয়াদি প্রভাবের কারণেই এমনটি হয়েছে।
এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনওএএ) জানিয়েছে, জুলাইয়ের এই ‘অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থান’ একটি উদ্বেগের কারণ।
বিবৃতিতে এনওএএর প্রশাসক রিক স্পিনরাড বলেন, ‘এক্ষেত্রে প্রথমটিই হচ্ছে সবচেয়ে বাজে অবস্থা। নতুন এই রেকর্ড বিশ্বের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন যে ঝঞ্ঝাটপূর্ণ ও ব্যাঘাত ঘটানোর পথ নির্ধারণ করেছে।’
জুলাইয়ে স্থলভাগ ও সমুদ্রপৃষ্ঠের সম্মিলিত তাপমাত্রা ২০১৬ সালের রেকর্ডের চেয়ে শূন্য দশমিক শূন্য এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।
জুলাইয়ে উত্তর গোলার্ধে ভূপৃষ্ঠের তামপাত্রা গড় তাপমাত্রার চেয়ে এক দশমিক ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিলো, যা এর আগের ২০১২ সালের রেকর্ডকে ছাপিয়ে গেছে।
তথ্য উপাত্ত আরও বলছে জুলাই ছিলো এশিয়ার সবচেয়ে উষ্ণতম এবং ইউরোপের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উষ্ণতম মাস। ইউরোপের উষ্ণতম মাসের রেকর্ডটি হয়েছে ২০১৮ সালে।
এওএএর বিবৃতিতে একটি মানচিত্রও যুক্ত করা হয়েছে, যেখানে জুলাইয়ে তাৎপর্যপূর্ণ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ‘অসঙ্গতিগুলো’ চিহ্নিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এ বছর বৈশ্বিক গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি।
এ সপ্তাহের শুরুতে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বের ওপর একটি ‘অভূতপূর্ব’ প্রভাব ফেলছে, বিশেষ করে কিছু পরিবর্তন হয়তো ‘শতাব্দি বা সহস্রাব্দেও ফেরত আনা সম্ভব হবে না’।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, এই অনুসন্ধানের ফল ‘মানবতার জন্য একটি অশনিসংকেত’।
জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৭০ সাল থেকে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা গত দুই হাজার বছরের মধ্যে যে কোনও ৫০ বছরের চেয়ে দ্রুত বেড়েছে।