রাখাইনদের জলকেলি উৎসব শুরু

রাখাইনদের জলকেলি উৎসব শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : মগীসনকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করতে কক্সবাজারের রাখাইন সম্প্রদায়ের ৩ দিনের সাংগ্রাইং পোয়ে বা ঐতিহ্যবাহী জলকেলি উৎসব শুরু হয়েছে বুধবার (১৭ এপ্রিল) থেকে। উৎসব উপলক্ষে রাখাইন পল্লীগুলো সেজেছে নানান রঙে। কক্সবাজার, মহেশখালী, টেকনাফ ও চকরিয়ার রাখাইন পল্লীগুলোতে আনন্দ উৎসব চলছে। রাখাইন তরুণ-তরুণীরা একে অপরকে জল ছিটিয়ে নতুন বছরের শুভকামনা জানাচ্ছে। এই জলকেলি উৎসব দেখতে রাখাইন পল্লীগুলোতে ভিড় করছে কক্সবাজারে আসা পর্যটক ও স্থানীয় নানা সম্প্রদায়ের লোকজন। পুরো জেলায় করা হয়েছে অর্ধশত প্যান্ডেল। মঙ্গল জল ছিটিয়ে ও নেচে-গেয়ে এসব প্যান্ডেলে চলছে পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণের উৎসব। রাখাইন সম্প্রদায়ের এ জলকেলি উৎসব উপলক্ষে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পহেলা বৈশাখ থেকে সাত দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করে থাকেন রাখাইনেরা। এর মধ্যে ১৭ থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী চলে সাংগ্রাং পোয়ে উৎসব। এবারও তার ব্যতিক্রম হয় নি।

রাখাইন পল্লীতে গিয়ে দেখা গেছে, তীব্র দাবদাহে ঠাণ্ডা জলে শরীর ভিজিয়ে আনন্দ-উল্লাস করছেন রাখাইন তরুণ-তরুণীরা। কয়েকটি প্যান্ডেলে শিশু-কিশোরেরাও অংশ নিয়েছেন জলকেলিতে। এজন্য কক্সবাজার শহরের হাঙরপাড়া, টেকপাড়া, বড়বাজার, চাউলবাজার, বৌদ্ধমন্দির সড়কের ক্যাং পাড়া ও এসএ (থংরো) পাড়া, টেকনাফের রাখাইন পল্লী, মহেশখালীর বড় রাখাইনপাড়া, ছোট রাখাইন পাড়া, চকরিয়ার হারবাং রাখাইন পল্লীতে অর্ধশত প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। রঙিন ফুল আর নানান কারুকাজে সাজানো হয়েছে প্যান্ডেলের চারপাশ। প্রতিটি বাড়িও সেজেছে নতুন সাজে।

 

কয়েকটি প্যান্ডেলে গিয়ে কথা হয় বিভিন্নজনের সঙ্গে। খুলনার ডুমুরিয়া থেকে আসা পর্যটক আবদুর রহমান, মহিয়ান ও আলিয়া বলেন, কক্সবাজারে বেড়াতে এসে রাখাইন সম্প্রদায়ের এই বর্ষবরণ উৎসব আমাদের জন্য বাড়তি পাওয়া।

মহেশখালী বড় রাখাইন পাড়ার মম রাখাইন বলেন, অনেক গরম, তারপরও আমাদের উৎসব চলছে। তিনি সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানান।

রাখাইন সম্প্রদায়ের বর্ষপঞ্জিকা মতে, ১৬ এপ্রিল (মঙ্গলবার) রাতে শেষ হয়েছে ১৩৮৫ মগীসন। ১৭ এপ্রিল (বুধবার) শুরু হলো রাখাইন নতুন বর্ষ ১৩৮৬ মগীসন। রাখাইন সম্প্রদায়ের মানুষ বলছেন, পুরাতন বছরের সকল গ্লানি, দুঃখ জলে মুছে নতুনভাবে জলে জলে পরিশুদ্ধির জন্য এই জলকেলি উৎসব।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম, পিপিএম বলেন, বিশেষ করে রাখাইন পল্লীগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রাখাইন সম্প্রদায়ের এই বর্ষবরণ উৎসব যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়, সে লক্ষ্যে বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।