ডন প্রতিবেদন : র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেছেন, র্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে সত্য নয়। র্যাবের মতো মানবিকতা বিশ্বের খুব কম বাহিনীই দেখিয়েছে।
বাংলাদেশে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে প্রতিষ্ঠান হিসেবে র্যাব এবং র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মার্কিন সরকার। আজ শনিবার কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে একটি চুরির ঘটনা উদ্ঘাটন নিয়ে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেছিলো র্যাব।
সংবাদ সম্মেলন শেষে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অবস্থান নিয়ে র্যাবের প্রতিক্রিয়া জানতে চান সাংবাদিকেরা। জবাবে আল মঈনের দাবি, র্যাবের মতো মানবিকতা বিশ্বের খুব কম বাহিনীই দেখিয়েছে। র্যাব মানবাধিকার লুণ্ঠন করে না, মানবাধিকার রক্ষা করে। তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে যা কিছু জেনেছেন, তার সবই গণমাধ্যম থেকে পাওয়া। আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানাবে।
আল মঈন জানান, মানবাধিকার রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী র্যাবের লে. কর্নেল আজাদসহ ২৮ জন জীবন দিয়েছেন। মানবাধিকার রক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা সমুন্নত রাখতে র্যাবের এক হাজারের অধিক সদস্যের অঙ্গহানি হয়েছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা সমুন্নত রাখার জন্য দুই হাজারের বেশি সদস্য বিভিন্নভাবে আহত হয়েছেন।
র্যাবের মুখপাত্র আল মঈন আরও বলেন, ‘বিশ্বে এমন কোনো ফোর্স নেই, যার সদস্যসংখ্যা ৯ হাজার, তাঁদের মধ্যে আমি যে পরিসংখ্যান দিলাম... দেশের আইনশৃঙ্খলা মানবাধিকার রক্ষার্থে এভাবে আত্মত্যাগ করেছে কি না, আমার সন্দেহ রয়েছে।’
বিভিন্ন বাহিনীর চৌকস কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে র্যাব গঠিত এবং তাঁরা নির্দিষ্ট কিছু কাজ করে থাকেন। আল মঈন জানান, র্যাবের উদ্যোগে সুন্দরবন জলদস্যুমুক্ত হয়েছে।
৩৬টি বাহিনীর ৩২৬ জন আত্মসমর্পণ করেছেন। জঙ্গিবাদ দমনেও র্যাব কাজ করেছে। তাঁদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি জানান, জলদস্যুদের ঘর বানিয়ে দিয়েছে, গরু দিয়েছে, সুস্থ জীবনে ফিরে আসার জন্য যা যা দরকার, সব করেছে র্যাব। বিশ্বের খুব কম বাহিনীই এত মানবিকতা দেখিয়েছে। র্যাবেই প্রথম ডোপ টেস্টের উদ্যোগ নেওয়া হয়, যেন কোনো মাদকাসক্ত এই বাহিনীতে ঢুকতে না পারেন। করোনার সময় যখন ছেলে বাবাকে কিংবা বাবা ছেলেকে ফেলে গেছেন র্যাব হেলিকপ্টারে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে এসেছে।
সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে র্যাবের সম্পৃক্ততার যে অভিযোগের কথা উঠেছে সে সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। আল মঈন বলেন, ‘বিভিন্ন সময় গুলিবিনিময় বা ক্রসফায়ার নিয়ে অভিযোগ ওঠে। আত্মরক্ষার অধিকার আইন দিয়েছে। মাদক ও জঙ্গিবাদবিরোধী অভিযানে আমরা যখন প্রতিরোধের শিকার হয়েছি, যখন গুলি চালিয়েছে তখনই আমরা গুলি করেছি। গুলি বিনিময়ে অফিসার ও বিভিন্ন সদস্য শহীদ হয়েছেন।’
আল মঈন জানান, প্রতিটি গুলিবর্ষণের ঘটনার নির্বাহী তদন্ত হয়। যদি কেউ ভুল করে থাকেন, তাহলে র্যাব কঠোর ব্যবস্থা নেয়। আইন ও নিয়ম ভঙ্গের বিরুদ্ধে র্যাবের অবস্থান কঠোর।