ব্যাটিংয়ে বীরত্বের পর শেষ বিকেলে বোলিং দাপটে দিন শেষ হলো বাংলাদেশের

ব্যাটিংয়ে বীরত্বের পর শেষ বিকেলে বোলিং দাপটে দিন শেষ হলো বাংলাদেশের

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ২৬ রানের মধ্যে শুরুর ৬ উইকেট হারিয়ে ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটিং বীরত্বে ২৬২ রান পর্যন্ত করে টাইগাররা। প্রথম ইনিংসে পাকিস্তান ২৭৪ রান করায় বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকে মাত্র ১২ রানে। শেষ বিকেলে পাকিস্তানের ব্যাটিং ইনিংসেও দাপট দেখিয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা। ৯ রানের মধ্যেই তুলে নিয়েছেন ২ উইকেট। এরপর দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ ঘোষণা করেন আম্পায়ার। স্বাগতিকরা লিড পায় ২১ রানের।

আজ রবিবার (পহেলা সেপ্টেম্বর) রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিনা উইকেটে ১০ রান নিয়ে তৃতীয় দিনে মাঠে নামে বাংলাদেশ। টেস্টের প্রথম দিন ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। এদিন দলীয় ষষ্ঠ ওভারে ব্যক্তিগত ১ রানে থাকা জাকির হাসানকে আবরার আহমেদের ক্যাচে ফেরান খুররম শাহজাদ। এরপর নিজের পরের ওভারে জোড়া আঘাত করেন এই পেসার। ১০ রানে থাকা আরেক ওপেনার সাদমানকে বোল্ড করার পর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকেও বোল্ড করেন।

দৃশ্যপটে এরপর মীর হামজার আগমন। মুমিনুল হককে মোহাম্মদ আলীর সহজ ক্যাচে ফেরান। আর প্রথম টেস্টে ম্যাচসেরা মুশফিকুর রহিমকে উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ানের ক্যাচে মাঠ ছাড়া করান। খুররম পরে সাকিব আল হাসানকে এলবির ফাঁদে ফেলেন। মাত্র ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। এরপরই মহাকাব্যিক জুটি বাঁধেন লিটন ও মিরাজ। দুজনে যোগ করেন রেকর্ড ১৬৫ রান।

দলীয় ১৯১ রানে ফেরেন মিরাজ। তার আগে ১২৪ বলে ১২টি চার ও ১ ছক্কায় করেন মূল্যবান ৭৮ রান। দলের সঙ্গে আর ২ রান যোগ হতেই ফেরেন তাসকিন আহমেদ। এরপর আরেকবার ব্যাটিং দৃঢ়তা দেখায় বাংলাদেশ। হাসান মাহমুদকে নিয়ে ৬৯ রানের মূল্যবান জুটি গড়েন লিটন। এরই মধ্যে টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। সেঞ্চুরির পর বেশিরভাগ সময় স্ট্রাইক ধরে রেখে দলের রান এগিয়ে নিয়ে যান তিনি। 

আরেক পাশে হাসান মাহমুদও ব্যাট হাতে দেখিয়েছেন নিপুণ দক্ষতা। আদায় করেছেন বাউন্ডারিও। শেষমেশ লিটনের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। ২২৮ বলে ১৩টি চার ও ৪ ছক্কায় করেন ১৩৮ রান। মাত্র ৪ রানের জন্য পারলেন না নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে। এর আগে, ইনিংসে সর্বোচ্চ ১৪১ রান করেছিলেন তিনি। ২৬২ রানে নবম উইকেট হারানো বাংলাদেশ দশম উইকেট হারায় একই রানে। ২ বল খেলে কোনো রান না করেই আগা সালমানের বলে এলবিডব্লিউ হন নাহিদ রান। শেষ পর্যন্ত ৫১ বলে ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন হাসান।

পাকিস্তানের হয়ে বল হাতে সবচেয়ে সফল পেসার খুররম শাহজাদ। ৯০ রানের বিনিময়ে ৬ উইকেট নেন এই বোলার। ২টি উইকেট বাঁহাতি পেসার মির হামজার। বাকি দুইটি উইকেট নিয়েছেন স্পিনার আগা সালমান। প্রথম টেস্টে হারার পর সমালোচনার মুখে লেগ স্পিনার আবরার আহমেদকে দলে ভেড়ায় পাকিস্তান। তবে ৮৩ রান দিলেও কোনো উইকেটের দেখা পান নি তিনি।

শেষ বিকেলে ব্যাট করতে নামেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার আবদুল্লাহ শফিক ও সাইম আইয়ুব। প্রথম ইনিংসে প্রথম ওভারেই উইকেট নিয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ। আজ দিনের দ্বিতীয় ওভারে উইকেট পায় বাংলাদেশ, এবার শিকারী হাসান মাহমুদ। মাত্র ৩ রান করেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শফিক। এরপর নাইটওয়াচম্যান হিসেবে মাঠে নামেন বলে আগুন ঝড়ানো খুররম শাহজাদ। দলীয় চতুর্থ ও নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে শাহজাদকেও বোল্ড করেন হাসান। এর পরই দিনের খেলা শেষ করে দেন আম্পায়ার।