মাস্টারদা সূর্য সেনের ফাঁসি দিবসে ৩ সংগঠনের শ্রদ্ধা
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলার কাগজ; এস চাঙমা সত্যজিৎ, খাগড়াছড়ি : ব্রিটিশ শাসন বিরোধী অন্যতম নেতা মাস্টারদা সূর্য সেনের ৮৯তম ফাঁসি দিবসে তিন সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে। এক্ষেত্রে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনকারী রাজনৈতিক দলের নেতারা।
মাস্টারদার স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সকালে সাড়ে ৭টায় চট্টগ্রামের রাউজানে মাস্টারদা সূর্য সেনের উদ্দেশ্যে নির্মিত শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখার সাধারণ সম্পাদক সোহেল চাকমা, কেন্দ্রীয় সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক অমিত চাকমা, চবি শাখার সহ-সভাপতি নিউটন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শুভ চাক্ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য দয়াসোনা চাকমা, জেসী চাকমা পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে ব্রিটিশ শাসন বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা মাস্টারদা সূর্য সেনসহ নিপীড়িত জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই সংগ্রামে আত্মবলিদানকারী সকল বীরদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। নীরবতা পালন শেষে মুষ্টিবদ্ধ হাতে বীর শহীদদের রেড স্যালুট জানিয়ে এবং স্লোগান দিয়ে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হয়।
এ সময় তিন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সূর্য সেনের সংগ্রামীর জীবন তুলে ধরে বক্তব্যে বলেন, ভারতবর্ষে ব্রিটিশদের শাসন-শোষণের হাত থেকে নিপীড়িত জাতি ও জনগণকে মুক্ত করতে মাস্টারদা সূর্য সেনের মত বহু বিপ্লবী জীবন দিয়েছেন। তাঁরা ভারতীয় উপমহাদেশকে স্বাধীন করার জন্য অনেক ত্যাগ, ঝুঁকি নিয়ে নানা কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে মানুষকে সংগঠিত করেছিলেন। মাস্টারদা সূর্য সেন রাজনৈতিক বিচক্ষণতার সঙ্গে প্রতিরোধ বাহিনী গড়ে তুলে চট্টগ্রামে ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। তাঁর কাছ থেকে বিপ্লবী দীক্ষা নিয়ে ভারতকে স্বাধীন করে জাতিকে মুক্ত করতে ক্ষুদিরাম বসু, প্রীতিলতার মতো অসংখ্য বিপ্লবী জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। বিপ্লবীদের আত্মবলিদান আমাদেরকে সাহস, শক্তি ও অনুপ্রেরণা যোগায়।
তাঁরা আরও বলেন, বিপ্লবী সূর্য সেন চট্টগ্রাম অঞ্চলে সশস্ত্র সংগ্রাম পরিচালনা করে ব্রিটিশ শাসকদের তাড়িয়ে দেওয়ার পর ধীরে ধীরে ভারতবর্ষ থেকে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে। পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণও বাংলাদেশ সরকার ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনী কর্তৃক আজ নির্যাতিত, নিপীড়িত। শাসকগোষ্ঠী প্রতিনিয়ত পাহাড়ি জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। সূর্য সেনের ফাঁসির দিবসে তাঁর স্মৃতিস্তম্ভে দাঁড়িয়ে আমরা আহ্বান করতে চাই, মাস্টারদার নেতৃত্বে যেভাবে জনগণকে সংগঠিত করে ব্রিটিশ শাসকদের এই অঞ্চল থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিলো, অসংখ্য বিপ্লবী আত্মবলিদান দিয়ে যেভাবে ভারতবর্ষের জনগণকে মুক্ত ও স্বাধীন করেছিলো, সেভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে জনগণকে এ দেশের শাসকগোষ্ঠীর অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে জাতিকে মুক্ত করতে হবে। এই লক্ষ্যে পাহাড়ি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অধিকার আদায়ের আন্দোলনে শামিল হতে হবে বলে তাঁরা উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।