মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারে গ্রাহকদেরসঙ্গে প্রতারণা!

মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারে গ্রাহকদেরসঙ্গে প্রতারণা!
ডন প্রতিবেদন : রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের একটি দোকানে গ্রাহকদেরসঙ্গে জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এক্ষেত্রে এমন বিষয় নিয়ে অভিযোগ করেছেন খোদ বাঙলা কাগজ ও আওয়ার ডনের কর্মী মোহাম্মদ সুমন। তিনি বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, আমাদের (বাঙলা কাগজ ও ডনের) অফিসিয়াল কাজের জন্য ২০২০ সালের ২৮ জুন মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের নিচতলার ১৩২ নম্বর দোকান হাইটেক প্রফেশনালস থেকে একটি স্ক্যানার কাম ফটোকপিয়ার কাম প্রিন্টার কেনা হয়। কিন্তু এই প্রিন্টার থেকে দীর্ঘদিন কোনও প্রিন্ট না দেওয়ায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আর কোনও প্রিন্ট হচ্ছিলো না। তখন মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের ক্রয়কৃত দোকানে আমরা প্রিন্টারটি নিয়ে গেলে সেখান থেকে জানানো হয়, ভাউচারে ১ বছরের ওয়ারেন্টি দেওয়া আছে। তাই এটি এখন ঠিক করতে হলে টাকা দিয়ে ঠিক করতে হবে এবং সেটি ৬ তলার কোনও দোকান থেকে করালেই ভালো হবে। ‘তখন আমি প্রিন্টারটিকে নিয়ে ৬ তলার প্রিন্টার সলিউশন- নামক দোকানে যাই এবং প্রিন্টারটি দেখার পর তাঁরা বলেন, এটি ঠিক করতে ৫ হাজার টাকা লাগবে। যেখানে দুইটি কার্টিজ চেঞ্জ করতে হবে। তখন তাঁরা আরও বলেন, প্রিন্টারটি দোকানে রেখে যাওয়ার জন্য এবং এক/দেড় ঘণ্টা পর দোকানো যাওয়ার জন্য।’ ‘পরে আমি দেড় ঘণ্টা পরে যাওয়ার পর আমাকে প্রিন্টারটি থেকে প্রিন্ট দিয়ে দেখানো হয় কিন্তু বাসায় আসার পর এটি দিয়ে আর প্রিন্ট হচ্ছিলো না।’ ‘পরে আমি প্রিন্টারটি নিয়ে আবারও প্রিন্ট সলিউশনে যেতে চাই, কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ায় সেটি আর হয় নি। কারণ তখন দোকান বন্ধ হয়ে গেছে। আর যেদিন আমি সার্ভিসিং করিয়ে এনেছি, সেদিন ছিলো ৭ ফেব্রুয়ারি, আর তার পরদিন ৮ ফেব্রুয়ারি ছিলো মঙ্গলবার। আবার মঙ্গলবার এলিফ্যান্ট রোডের সব মার্কেট বন্ধ।’ ‘সার্বিকভাবে পরে আমি অফিসিয়াল বিভিন্ন কাজে ঢাকার বাইরে যাওয়ার পর আর প্রিন্টারটি মাল্টিপ্ল্যানে নেওয়া হয় নি। পরে আমাদের সম্পাদক মহোদয় গত ১১ মার্চ প্রিন্টারটি দিয়ে আমাদের এক সহকর্মীর মাধ্যমে সেটি মাল্টিপ্ল্যানে পাঠান। কিন্তু সেখানে পাঠানোর পর প্রিন্টার সলিউশন নামক দোকান থেকে জানানো হয়, আমাদের প্রিন্টারের মাদারবোর্ড নষ্ট।’ ‘এখন কথা হলো, আমরা আমাদের প্রিন্টারটি অন্য কোথাও দেখাই নি এবং প্রিন্টার সলিউশনই ঠিক করেছে। আবার আমাকে বলেছে, এক/দেড় ঘণ্টা পর যাওয়ার জন্য। এখন তাহলে প্রিন্টার সলিউশনই আমাদের মাদারবোর্ড চেঞ্জ করে দিয়েছে।’ জানা গেছে, এমন ঘটনা ঘটার পর রবিবার (১৩ মার্চ) আমাদের সম্পাদক ও প্রকাশক জনাব কালাম আঝাদ মহোদয় মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারে যান। ওখানে গিয়ে তিনি লেভেল ৬ এর প্রিন্টার সলিউশন নামক দোকানে গিয়ে বলেন যে, ‘আমাদের (বাঙলা কাগজ ও ডনের) প্রিন্টারের মাদারবোর্ড চেঞ্জ করলে এই দোকান থেকেই করা হয়েছে। সুতরাং এর দায়ভার আপনাদেরকেই নিতে হবে। কারণ আমরা অন্য কোথাও থেকে এটি ঠিক করাই নি এবং অন্য কোথাও দেখাইও নি।’ এ সময় বিষয়টি নিয়ে কিছুটা হট্টগোলের সৃষ্টি হওয়ায় ফ্লোরের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা পাশের দোকানে জনাব কালাম আঝাদকে নিয়ে গিয়ে দোকানদারকেসঙ্গে নিয়ে আলোচনায় বসেন। এ সময় বেশ কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে সর্বশেষ সিদ্ধান্ত হয়, বাঙলা কাগজ ও ডনের কাছে থাকা প্রিন্টার কেনার রশিদ উনাদেরকে (গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে) দিলে উনারা প্রিন্টারের সিরিয়াল নম্বর দেখেই বুঝতে পারবেন, এর মাদারবোর্ড চেঞ্জ করা হয়েছে কি-না। আর এ বিষয়ের দায়িত্ব নেন সাউথ বাংলা কম্পিউটারের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া (মুকুল)। তখন বাঙলা কাগজ ও ডনের পক্ষ থেকে রশিদটি সোমবার (১৪ মার্চ) দেওয়ার কথা হয়। অথচ বাঙলা কাগজ ও ডনের পক্ষ থেকে সোমবার রশিদটি দেওয়ার পর মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া (মুকুল) বাঙলা কাগজ ও ডনের কাছে দাবি করেন, তিনি মাদারবোর্ডের সিরিয়াল নম্বর পাচ্ছেন না। ‘এখন মাদারবোর্ড চেঞ্জ করাতে হলে আরও ৬ হাজার টাকা দিতে হবে।’ অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রিন্টার সলিউশনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তারা কেবল অন্য একটি প্রিন্টার থেকে মাদারবোর্ডটি চেঞ্জ করে দেখেছেন, আসলেই মাদারবোর্ডে সমস্যা কি-না। কিন্তু তারা মাদারবোর্ড পরিবর্তন করে দেন নি। সার্বিক ব্যাপারে বাঙলা কাগজ ও ডনের সম্পাদক ও প্রকাশক জনাব কালাম আঝাদ বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, আমি প্রিন্টারটি কিনেছি ১১ হাজার টাকা দিয়ে। আর কার্টিজের জন্য ৫ হাজার টাকা দিয়েছি এখন আবার বলছে মাদারবোর্ডের জন্য ৬ হাজার টাকা দেওয়ার জন্য। তাহলে আমি প্রিন্টার কেনো আর ঠিক করাতে যাবো, আর টাকা দেবো। এমন অবস্থায় তো আমার একটি নতুন প্রিন্টার কেনাই শ্রেয়। তিনি বলেন, মাল্টিপ্ল্যান সেন্টার থেকে যা করা হয়েছে, তা কল্পনাও করা যায় না। কারণ তথ্য-প্রযুক্তি খাতে এমন জালিয়াতি হলে তা ভয়াবহ। সম্পাদক মহোদয় বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশের কাজ কিছুটা হলেও থমকে যাবে যদি এমনটি হয়। তাই খাতটিকে পুরোপুরি অনিয়মের হাত থেকে মুক্ত করতে করতে এখনই উদ্যোগ নেওয়া উচিত।’ ‘আর জালিয়াতিরসঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা উচিত দ্রুত।’