মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২ জঙ্গি পালাতে পারায় জামায়াতের সঙ্গে মিলে হামলার পরিকল্পনা!

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২ জঙ্গি পালাতে পারায় জামায়াতের সঙ্গে মিলে হামলার পরিকল্পনা!

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন : জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যার ঘটনায় মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির এবং মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে সফলতা হিসেবেই দেখছে জঙ্গিরা। এটাকে তারা মনে করছে, তাদের শক্তিমত্তা বেড়েছে। এদিকে জামাতুল আনসার ফিল ইন্দাল শারক্বীয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত জামায়াতের আমির গ্রেপ্তার হওয়ার পর নিষিদ্ধ ঘোষিত এ দলটি জঙ্গিদের সঙ্গে মিলে হামলার পরিকল্পনা আঁটছে বলেই জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, র‌্যাব এবং বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা এখন অনেক বেশি। এরই অংশ হিসেবে যে কোনও ক্লুলেস ঘটনারও স্বল্প সময়েই তদন্ত শেষ করে ফেলতে পারছে তাঁরা। এ অবস্থায় দুই জঙ্গি পালিয়ে যাওয়ার পর তাদের গ্রেপ্তার করতে না পারার মতো সক্ষমতা পুলিশের থাকার কথা নয়। এক্ষেত্রে মূলত জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানতে চাইছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তবে এটি নাও হতে পারে। এরপরও সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গির স্বল্প সময়ের মধ্যেই গ্রেপ্তার হওয়ার কথা রয়েছে।

সূত্রমতে, বিএনপির সঙ্গে এক হয়ে সরকার পতনের আন্দোলনে আগে থেকেই ছিলো জামায়াত। কিন্তু বিএনপি বিষয়টি প্রকাশ করে নি; পাশাপাশি নিষেধও করে নি। শুধু বিএনপি বলেছে, এ ব্যাপারে কথা বলার সময় এখনও আসে নি। তবে সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির আন্দোলনে জামায়াতের নেতাকর্মীরা অংশ নিচ্ছেন এবং তাদের একটি অংশ দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। ইতোমধ্যে বিএনপির বিভিন্ন সমাবেশের আগে জামায়াত-শিবিরের বেশকিছু নেতাকর্মী গ্রেপ্তারও হয়েছেন।

সূত্র জানায়, জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান গ্রেপ্তার হওয়ার পর নিষিদ্ধ ঘোষিত এ দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিলে দেশে হামলা চালাতে চাইছে জঙ্গিরা। এদিকে ইতোমধ্যেই জামায়াতের আমিরের ছেলে জঙ্গিবাদে জড়িত এবং শফিকুর রহমান তার ছেলেকে জঙ্গিবাদের জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে বলেই জানিয়েছে পুলিশ। এ অবস্থায় জামায়াতের আমির গ্রেপ্তার হওয়ার পর একটি অংশ আরও নির্জীব হয়ে পড়েছে। তবে বাদবাকি অংশ জঙ্গিদের সঙ্গে মিলে দেশে হামলা চালানোর পরিকল্পনা আঁটছে। যদিও জামায়াতের আগের মতো আর সক্ষমতা নেই। এবং তাদের নেতাদের একটি বড় অংশেরই ফাঁসি হয়ে গেছে; আর বাকিদের বেশিরভাগই বর্তমানে জেলে আছেন। তবে এ অবস্থায়ও হামলা চালাতে চাইছে তারা।

সূত্র আরও জানায়, পাহাড়ে এবং সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে জঙ্গিরা। তবে তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি টের পেলেই সটকে পড়ছে। এ অবস্থায় তারা তেমনভাবে প্রশিক্ষণও গ্রহণ করতে পারছে না। 

সূত্রমতে, কিছু রোহিঙ্গাকে দলে ভিড়িয়ে অপহরণের মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছে জঙ্গিরা। এক্ষেত্রে তারা মুক্তিপণের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। যেখানে তাদের সঙ্গে কিছুক্ষেত্রে যোগ দিচ্ছে আরসার সদস্যরা।

সূত্র আরও জানায়, কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও শিবিরের মতাদর্শী ব্যক্তিরা কিছু সময় পরে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে যাওয়ার ঘটনা দেশে রয়েছে। এক্ষেত্রে অধিকাংশ জঙ্গিই জীবনের কোনও না কোনও পর্যায়ে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। এমন অবস্থায় সূত্রগুলো বলছে, জঙ্গিবাদে জড়িত কি-না, তা দেখতে অতীতে শিবির বা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলো কি-না এবং এখন সন্দেহজনক কাজ করছে কি-না; এমন বিষয় আমলে নিতে পারেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।