নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : প্রায় তিন বছর ধরে ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ক্রিকেটার মোশাররফ হোসেন রুবেল আজ মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) মারা গেছেন।
তাঁর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তাঁর সহপাঠী ও বন্ধু মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান চৌধুরী।
ঢাকার একটি হাসপাতালে ৪০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
২০১৯ সাল থেকেই জটিল এই রোগে ভুগছিলেন মোশাররফ হোসেন রুবেল।
স্ত্রী ও পাঁচ বছর বয়সী এক সন্তান রেখে গেছেন তিনি।
শিক্ষাজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে ছিলেন তিনি।
বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে পাঁচটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন রুবেল।
২০২০ সালে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু গত বছর আবারও নতুন করে মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়ে।
গত মাসে বেশ গুরুতর অবস্থায় রুবেলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো।
চলতি মাসের ১৫ তারিখ বাসায় ফিরেছিলেন।
ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, আজ মোশাররফ হোসেন রুবেল আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
শুরুর দিকে যখন মস্তিষ্কের টিউমার ধরা পড়ে, তখন সার্জারির জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকার প্রয়োজন ছিলো। এতে তিনি ফ্ল্যাট বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
ঢাকা ও সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হয়েছে বলে সার্জারির আগেই ততোদিনে এক কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছিল বলে জানান, বন্ধু জাহিদুর রহমান।
বাঁ হাতি স্পিন ও লেট অর্ডারে ব্যাটিং- দুই মিলিয়ে ঢাকার ক্রিকেটে দ্রুতই মানিয়ে নিয়েছিলেন রুবেল। সাকিব আল হাসান-আব্দুল রাজ্জাকদের পূর্বে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা স্পিনার মোহাম্মদ রফিকের অবসরের পর জাতীয় দলে ডাক পেয়েছিলেন তিনি।
তাঁর প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচটি ছিলো ২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একটি ওয়ানডে সিরিজে।
কিন্তু কয়েক মাস পরেই কথিত বিদ্রোহী ক্রিকেটারদের লিগ, ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগে যোগ দেওয়ায় রুবেল বেশিদিন খেলতে পারেন নি জাতীয় দলে। তখন আইসিএলগামী ক্রিকেটারেরা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কাছে অবসরের চিঠিও দিয়েছিলেন।
২০০৯ সালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর তখন বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে ফেরেন মোশাররফ রুবেল।
২০০১-০২ মৌসুম থেকে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছেন এই বাহাতি স্পিনার।
রুবেল ঘরোয়া ক্রিকেটে তিন ফরম্যাটেই অবদান রেখেছেন।
২০১৩ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ফাইনাল ম্যাচে ম্যাচ সেরার পুরষ্কার পেয়েছিলেন।
যদিও মূলত ছিলেন বাহাতি স্পিনার কিন্তু প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর নামের পাশে রয়েছে ৩৩০৫ রান। সেঞ্চুরি করেছেন দুটি। ১৬টি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি।
নিয়েছেন ৩৯২টি উইকেট।
ব্রেইন টিউমার ধরা পড়ার আগে শেষবার ২০১৯ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলেছিলেন মোশাররফ রুবেল।