বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে শিক্ষা গ্রহণে বিশ্বের তরুণদের প্রতি রাষ্ট্রপতির আহ্বান

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে শিক্ষা গ্রহণে বিশ্বের তরুণদের প্রতি রাষ্ট্রপতির আহ্বান
বাসস : রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্ম ও আদর্শ থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজ নিজ দেশ ও জনগণের সেবায় নিয়োজিত হওয়ার জন্য বিশ্বের যুবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ৩০ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু গ্লোবাল ইয়ুথ লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ (বিজিওয়াইএলএ) অনুষ্ঠানের উদ্বোধনি ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বের তরুণদের অনুরোধ করবো, বঙ্গবন্ধুর কর্ম ও আদর্শ থেকে শিক্ষা নিন এবং নিজ নিজ দেশ এবং জনগণের সেবায় নিজেদেরকে নিয়োজিত করুন, ঠিক যেমনটি বঙ্গবন্ধু করেছিলেন।’ বিকেলে বঙ্গভবনের গ্যালারি হল থেকে রাষ্ট্রপতি ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এ সময় সংশ্লিষ্ট সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বড় পর্দার মাধ্যমে অনুষ্ঠানে অংশ নেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে (আবুল কালাম) আবদুল মোমেন, ইসলামিক কোঅপারেশন ইয়ুথ ফোরামের (আইসিওয়াইএফ) সভাপতি তাহা আয়হান এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল সভাপতিত্ব করেন। বঙ্গবন্ধুর কর্ম এবং তাঁর জন্মবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তি উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানের কথা স্মরণ করে আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমি নিজে খুব সৌভাগ্যবান যে, আমি জাতির পিতার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলাম এবং তাঁর কর্মযাত্রায় অংশ নিয়েছিলাম।’ সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ আর্থ-সামজিক ক্ষেত্রে বিরাট অগ্রগতি অর্জন করেছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলার’ স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জনের জন্য বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। রাষ্ট্রপতি অভিমত ব্যক্ত করেন, ‘টেকসই উন্নয়নের এই গতি অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালেরমধ্যে বাংলাদেশ একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে।’ কোভিড-১৯ মহামারি ছড়িয়ে পড়া এবং পরে বিশ্বব্যাপী এর বিরূপ প্রভাবের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্ব এই মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করছে এবং বর্তমান সরকার করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের সকল নাগরিককে পর্যায়ক্রমে টিকা কার্যক্রমের আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে করোনাভাইরাস মহামারির নেতিবাচক প্রভাব সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োপযোগী এবং সাহসি পদক্ষেপের কারণে সরকার করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবিলা করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নামে এই অনুষ্ঠানের নামকরণের মাধ্যমে আমাদের দেশ ও সারাবিশ্বের তরুণদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দেওয়ার একটি অর্থবহ উদ্দেশ্য সাধন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বে দেশের উত্থানের বর্ণনা দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, তিনি প্রবল চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আপসহীন ছিলেন। বিশ্বের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ যুব শক্তি, তাঁদেরকে মূল চালিকা শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার বিশেষ করে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বাংলাদেশকে একটি উন্নত জাতিতে পরিণত করার জন্য এই বিশাল যুব শক্তির সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। রাষ্ট্রপতি প্রথমেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় ৪ নেতা এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মদানকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাংলাদেশের বিদেশি বন্ধু ও সমর্থকদের অবদানের কথাও স্মরণ করেন এ সময়।