ডন প্রতিবেদন : ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তাঁর স্ত্রী তামিমা সুলতানারমধ্যে বিয়ে বৈধভাবে অনুষ্ঠিত হয় নি বলেই আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
তামিমা সুলতানার প্রথম স্বামী রাকিব হাসানকে দেওয়া তালাকের কাগজপত্র ‘জালিয়াতির মাধ্যমে’ তৈরি করা হয়েছে এবং যথাযথ প্রক্রিয়ায় তালাক দেওয়া হয় নি বলে তদন্তে জানতে পেয়েছে পিবিআই।
আদালতে বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন পিবিআইয়ের প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।
চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার একটি রেস্তোঁরায় তামিমা সুলতানা ও ক্রিকেটার নাসির হোসেনের বিয়ে হয়। এরপর ফেব্রুয়ারির ২৪ তারিখে তামিমা সুলতানার প্রথম স্বামী রাকিব হাসান নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আদালত তখন রাকিব হাসানের জবানবন্দি গ্রহণ করে বিষয়টি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
মামলা দায়ের হবার পর নাসির হোসেন এবং তাঁর স্ত্রী তামিমা সুলতানা সংবাদ সম্মেলনে রাকিব হাসানের অভিযোগকে মিথ্যা দাবি করেন।
সেই সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছিলো, নিয়ম অনুযায়ি তামিমার বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে এবং তামিমার বিয়ে ও সন্তান সম্পর্কে সবকিছু জেনেই তিনি বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তামিমাকে নিয়ে ভুল কিছু প্রচার করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছিলো ওই সময়।
বিষয়টি নিয়ে সে সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছিলো।
তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার একইদিন বৃহস্পতিবার (পহেলা অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেছেন, তদন্তে দেখা গেছে আইনগত বিধিব্যবস্থা অনুযায়ি তামিমা সুলতানার ডিভোর্স হবার আগেই নাসির হোসেন তাঁকে বিয়ে করেছেন।
‘তামিমা সুলতানা ও নাসির হোসেন তালাকের যে সময় এবং প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানিয়েছেন, তদন্তে সেসব তথ্যে গড়মিল দেখা গেছে।’
পিবিআই প্রধান আরও বলেন, ‘তদন্তে দেখা যায়, একটি তালাক হতে হলে যে ৩টি শর্ত পূরণ করতে হয়, যেমন সংশ্লিষ্ট কাজিকে উপস্থাপন করা; যাঁকে তালাক দেওয়া হচ্ছে, তাঁর বাড়িতে একটি নোটিশ পাঠানো এবং যাঁকে তালাক দেওয়া হচ্ছে, তাঁর স্থায়ি ঠিকানায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর একটি নোটিশ পাঠানো- এগুলোর কোনটিই ঠিকঠাক করা হয় নি।’
‘তামিমা যে দাবি করেছেন যে, নোটিশ একটি নির্দিষ্ট তারিখে পাঠানো হয়েছে, সে তারিখে ওই বাড়িতে রাকিব হোসেন থাকতেন না। মানে ঠিকানা ভুল ছিলো।’
‘আর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পিবিআইকে বক্তব্য দিয়েছেন যে এমন কোনও চিঠি তাঁর রেজিস্টারে নেই।’
‘সুতরাং পুরো বিষয়টিতেই অনিয়ম হয়েছে।’
বনজ কুমার মজুমদার আরও বলেন, ‘পুরো ব্যাপারটি একটি জালিয়াতি এবং বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত যাবতীয় দলিল জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।’
সার্বিকভাবে নাসির হোসেন ও তামিমার বিয়ে বৈধ হয় নি বলেই জানিয়েছেন তিনি।