বাসস : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন রবিবার (৬ মার্চ) বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) সফরকালে বাংলাদেশ ও তেল-সমৃদ্ধ দেশটির মাঝে চার থেকে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) হতে পারে। আজ রাজধানীতে রাষ্ট্রীয় অতিথিশালা পদ্মায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই সমঝোতা স্মারকগুলো এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে এ সফরকালে ৪ থেকে ৫টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী এবং দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রাশিদ আল মাকতূমের আমন্ত্রণে ৫ দিনের সরকারি সফরে ইউএই যাবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুবাই শাসকেরসঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে দুবাই এক্সপোতে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন। সফরকালে দু’দেশের মধ্যকার বাণিজ্য ঘাটতি মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশী পণ্য রপ্তানি বাড়াতে বাংলাদেশ ইউএই’রসঙ্গে ‘সরাসরি শিপিং’ লাইন চালু করার ওপর জোর দেবে। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি বিশ্বখ্যাত বন্দর ব্যবস্থাপনা কোম্পানিকে নতুন পতেঙ্গা বন্দরের পাশে পরিকল্পিত বে টার্মিনালগুলোর মধ্যে একটি নির্মাণ করতে দেওয়ার ব্যাপারে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে। তিনি জানান, দ্বিপাক্ষিক আলোচনাকালে বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রগুলোতে সহযোগিতা বৃদ্ধির ব্যাপারে আলোচনা করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকা অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে আইসিটি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রগুলোতে সংযুক্ত আরব আমিরাতেরসঙ্গে সহযোগিতার এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে আগ্রহী, যা বাংলাদেশের সক্ষমতকে সম্মৃদ্ধ করে আসন্ন ৪র্থ শিল্প বিপ্লব যুগেরসঙ্গে তাল মেলাতে সক্ষম করে তুলবে। তিনি বলেন, পাশাপাশি, দু’দেশের ব্যবসায়ী কোম্পানিগুলোর মধ্যে এক যৌথ ব্যবসা ফোরাম গঠিত হবে।
ড. মোমেন বলেন, ‘আমি আশা করছি, এটা আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য খাতের জন্য অনেক লাভজনক হবে। এটা বিনিয়োগের নতুন ক্ষেত্রও তৈরি করতে পারে।’ তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউএই’র মা শাইখা ফাতিমা বিনতে মুবারক আল কেতবি’রসঙ্গে দেখা করবেন, যা একটি বিরল সুযোগ। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুবাই এক্সপোতে বাংলাদেশী প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করবেন, যেখানে গত বছর থেকে বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক অঙ্গণে দেশের অসামান্য আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তুলে ধরছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সফরকালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাস আল খাইমায় বাংলাদেশী কমিউনিটি পরিচালিত ‘বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল’ এর একটি নতুন ক্যাম্পাসের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন।
ইউএইকে দ্বিতীয় বৃহত্তম রেমিটেন্স আয়ের দেশ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশীদের জন্য পুনরায় শ্রম বাজার উন্মুক্ত করেছে। এটা বাংলাদেশের কূটনৈতিক বিজয়।’ তিনি আশা করেন, এই উচ্চ পর্যায়ের সফরটি বাংলাদেশী জনশক্তির জন্য অধিকতর সুযোগ সৃষ্টি করবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ১২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসবেন।
এ সময় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামসও উপস্থিত ছিলেন।