নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, ঈদের ছুটির পরপরই ভারত ও বাংলাদেশের সব রুটে পুনরায় বাস ও রেল যোগাযোগ চালু হতে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের পর দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
এস জয়শঙ্কর বলেন, দুই নিকট প্রতিবেশির সম্পর্ককে পরের ধাপে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে এবং সহযোগিতা নিবিড় করতে তিনি এবার ঢাকা সফরে এসেছেন। তাঁর মতে, নিয়মিত, অনানুষ্ঠানিক এবং আন্তরিকতাপূর্ণ যোগাযোগ দুই প্রতিবেশির মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের যে সম্পর্ক, তার চমৎকার এক প্রতিফলন।
এস জয়শঙ্কর বলেন, ‘বাংলাদেশে আসতে পারা সব সময় আনন্দের। এক বছরের কিছুটা বেশি সময় পর আবার ঢাকায় এলাম। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কোভিড-১৯ মহামারির এই চ্যালেঞ্জের সময়েও আমরা নিয়মিতভাবে একে অন্যের সঙ্গে আলোচনায় যুক্ত থেকেছি। আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে অগ্রগতি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘গত বছর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করেছেন। এই দুই সফর সম্পর্কের এক মাইলফলক। এই সময়টা ছিলো আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী।’
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শুভেচ্ছাবার্তা তাঁর কাছে পৌঁছে দিয়েছি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সুবিধাজনক সময়ে ভারতে তাঁকে আমরা স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় রয়েছি। তাঁর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে পর্যালোচনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দুই দেশের যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) সপ্তম বৈঠকে আমন্ত্রণ জানাতে ভারত অপেক্ষায় রয়েছে। এ আলোচনা দুই দেশের সম্পর্ককে পরের ধাপে উন্নীত করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
এ সময় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণদান, বিনিয়োগ, ভ্রমণসেবা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে বলেও উল্লেখ করেন।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে নতুন প্রকল্প শুরু করার বিষয়ে ভারতের আগ্রহের কথা উল্লেখ করে এস জয়শঙ্কর বলেন, ‘কোভিড–১৯ আমাদের শিখিয়েছে আঞ্চলিকভাবে সরবরাহব্যবস্থা বজায় রাখা কতটা জরুরি।’ তিনি বলেন, ‘জলবিদ্যুৎ খাতে দুই দেশের জন্য এবং আঞ্চলিকভাবে সহযোগিতার অনেক সুযোগ রয়েছে। এই খাতে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের (বিবিআইএন) সহযোগিতা- কাঠামোতে আমরা কাজ করতে চাই। এ খাতে উৎপাদন, সঞ্চালন ও বাণিজ্যের বিষয়ে ভারত কাজ করে যাবে।’
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দুই দেশের সম্পর্কে সোনালি অধ্যায় চলছে বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারত ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। দুই দেশ একসঙ্গে যেভাবে কাজ করেছে, তা ইতিহাসে অনন্য। বড় বড় সমস্যা আমরা সমাধান করেছি। আমাদের যেসব ছোটখাটো সমস্যা আছে, তা সমাধানের অঙ্গীকার করেছি।’
সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (সেপা) সইয়ের কোনও সময়সীমা ঠিক হয়েছে কি না- জানতে চাইলে এস জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমি মনে করি, কর্মকর্তা পর্যায়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হচ্ছে।’