অসহায়ত্ব দেখিয়ে বাসা-বাড়িতে আশ্রয় : পরে শিশু চুরি।

অসহায়ত্ব দেখিয়ে বাসা-বাড়িতে আশ্রয় : পরে শিশু চুরি।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় শিশু আছে এমন বাসা-বাড়িতে গিয়ে নিজেদের অসহায়ত্ব দেখিয়ে আশ্রয় চাইতেন তারা। পরে সুযোগ বুঝে শিশু চুরি করে সটকে পড়তেন।

এ ছাড়া হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকেও শিশু চুরি করে অন্যত্র বিক্রি করে দিতেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে এই শিশু চোর চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

শুক্রবার (১৫ জুলাই) বিকেলে র‌্যাব-১০ এর স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) এনায়েত কবির সোয়েব বাঙলা কাগজ ও ডনকে এ তথ্য জানান।

র‌্যাব জানায়, শিশু চুরির খবরে বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর হুজুরপাড়া বেইলি রোড এলাকায় একটি বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় চুরি হয়ে যাওয়া শিশু মোছাইফা ইসলাম জান্নাতকে উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় চুরিতে জড়িত দুইজনকে।

গ্রেপ্তাররা হলেন : স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দেওয়া মুন্নি ও সুমন।

এএসপি এনায়েত কবির সোয়েব আরও জানান, রাজধানী কামরাঙ্গীরচর ঝাউলাহাটি এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় একমাত্র শিশু সন্তান জান্নাতিকে নিয়ে থাকেন প্লাস্টিক কারখানার শ্রমিক সাগর ও তার স্ত্রী সোনিয়া আক্তার। গত বুধবার (১৩ জুলাই) রাতে সোহাগের বড় ভাই রিকশা চালক শাহজাহান বাড়ি ফেরার পথে মুন্নি ও সুমন স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে আশ্রয় চান। পরে শাহজাহান তাদেরকে আশ্রয়ের জন্য তার ছোট ভাই সাগরের বাসায় নিয়ে যান। এক রাতের জন্য বাসায় রাখার জন্য বলেন। বড় ভাইয়ের কথা মতো মুন্নি ও সুমনকে তাদের বাসায় আশ্রয় দেন ওই দম্পতি।

পরের দিন বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) সকালে সাগর ও তার বড় শাহজাহান কাজে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সুমনও তাদের সঙ্গে বেরিয়ে যান। আর তার সঙ্গে আসা মুন্নি থেকে যান ওই বাসায়। পরে দুপুরে রান্না করার জন্য সাগরের স্ত্রী সোনিয়া শিশু কন্যা মোছাইফা ইসলাম জান্নাতকে খাটের ওপর শুইয়ে রেখে রান্না ঘরে যান।

কিছুক্ষণ পর সোনিয়া তার মেয়ের কোনও সারাশব্দ না পেয়ে ঘরে গিয়ে তাঁর মেয়ে ও মুন্নিকে দেখতে না পেয়ে ডাক চিৎকার করেন। অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাঁর স্বামী ও বড় ভাইকে ঘটনাটি জানান। পরে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। আর র‌্যাব-১০ এ একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগ দেওয়ার ছয় ঘণ্টার মধ্যে শিশুকে উদ্ধার করে র‌্যাব।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গ্রেপ্তাররা শিশু চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বেশ কিছুদিন ধরে কামরাঙ্গীরচরসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্লিনিক ও বাসা বাড়ি থেকে শিশু বাচ্চা চুরি করে আসছে। পরে সেই চুরি করা শিশুগুলো ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিঃসন্তানদের কাছে অধিক অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করতো

গ্রেপ্তারকৃতদের রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই ঘটনায় একটি মামলা করেছে ভুক্তভোগী শিশুর পিতা সোহাগ।