সরকারি জায়গা দখল করে একের পর এক গড়ে উঠছে পাকা স্থাপনা!

সরকারি জায়গা দখল করে একের পর এক গড়ে উঠছে পাকা স্থাপনা!

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলা কাগজ; মিজানুর রহমান, নগরকান্দা (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় নগরকান্দা পৌরসভা সদরে বিভিন্ন স্থানে সরকারি জায়গা দখল নিয়ে একের পর এক গড়ে উঠেছে পাকা স্থাপনা। এক্ষেত্রে দখলের পাশাপাশি দখলদারা ভূমি অফিস থেকে কৌশলে নিচ্ছেন ডিসিআর (ভূমি কর ছাড়া অন্যান্য সরকারি পাওনা আদায় করার পর যে নির্ধারিত ফরমে রসিদ দেওয়া হয় তাকে ডিসিআর বলে)।

এ সকল দখলদারেরা সরকারি জায়গা দখলে নেওয়ার পর নামে-বেনামে ডিসিআর নিয়ে স্থাপনা গড়ে আবার প্রচুর অর্থের বিনিময়ে বিক্রিও করছেন।

ভূমি অফিস থেকে দখলমূলে আধা শতাংশ জমি একেক জনের নামে ডিসিআর দিলেও দখলের জমির পরিমাণ বেশি হওয়ার কারণে বিভিন্ন নামে কৌশলে ডিসিআর নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এক্ষেত্রে ডিসিআর নিয়েই ক্রমেই দখল বৃদ্ধি করে আধা শতাংশ জমির বদলে এক থেকে দুই শতাংশ জমি বেশি দখল নিয়ে আছেন অনেকেই।

নগরকান্দা পৌরভবন (জেলা প্রশাসক) এর জায়গা নগরকান্দা পৌরভবন ছাড়া ভবনের চারপাশের জায়গা প্রায় সব দখল করে নিয়েছে একাধিক দখলদার। 

এ ছাড়া নগরকান্দা বাজার মডেল মসজিদের সামনে রাতের আঁধারে দখল নিয়ে দোকান ঘর উত্তোলন করে গড়ে উঠেছে মার্কেট।

দখল হয়ে গেছে কুমার নদীর পাড়ের সরকারি জায়গাও। দখল হয়ে গেছে বাজারের ফুটপাথ।

দখলদারেরা ভূমি অফিসে থেকে দখলমূলে এক বছরের জন্য লিজ (ডিসিআর) নিয়ে যুগের পর যুগ ভোগ করছেন। 

দখলদারিদের মধ্যে অনেকেই দখল পজিশন বিক্রি করায় হয়েছে হাতবদল। দখলদারেরা জমি মোটা অংকের টাকায় বিক্রি করে দিচ্ছে। সরকারি জায়গা বিক্রয় করা আইনগত অপরাধ হলেও আইনকে তোয়াক্কা করছেন না তারা। 

এ ছাড়া সরকারি জায়গায় দোকানঘর করে ব্যবসা করার কথা দরিদ্র ব্যবসায়ীদের। তাঁদের নামে নিয়ম অনুযায়ী ডিসিআর দেবে ভূমি অফিস। সেখানে রাঘববোয়ালেরা সে সকল সরকারি জায়গা দখল নিয়ে নামে-বেনামে নিচ্ছেন ডিসিআর। দখলদারদের মধ্যে অনেকেরই ১০ থেকে ২০ টি স্থাপনা দোকানঘর রয়েছে। কেউ গড়ে তুলছেন মার্কেট, কেউবা বাড়ি করে দিয়েছেন ভাড়া। সরকারি জায়গা বিক্রি করে ও ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন দখলদার মালিকেরা।

সবমিলিয়ে নগরকান্দায় থামছে না সরকারি জায়গা দখল, চলছে বিক্রির মহোৎসবও।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলায় পৌর এলাকায় শত শতাংশ সরকারি জমি এখন দখলদারদের দখলে। দখলদারিত্বের হাত থেকে সরকারি জায়গা উদ্ধারের কোনও তৎপরতাই চোখে পড়ছে না।

এ বিষয় নগরকান্দা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) এন এম আবদুল্লাহ আল মামুন বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘নগরকান্দা পৌরসভার মেয়র নিমাই চন্দ্র সরকার আমাকে অবগত করা মাত্রই পৌরভবনের সামনে দখল স্থানে গিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।’ 

‘এ ছাড়া যাঁরা অবৈধভাবে সরকারি জায়গা দখল নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

নগরকান্দা পৌরসভার মেয়র নিমাই চন্দ্র সরকার বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘আমি দখলের বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। যেখানে যেখানে পৌরসভা এরিয়ায় সরকারি জায়গা দখল করেছে, সে সকল জায়গা দখলমুক্ত করতে যা করণীয়, তাই করা হবে। পৌরসভার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এসব কাজ করবো।’