বাসস : স্বল্পোন্নত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণের সুপারিশ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অনুমোমন পেয়েছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম বৈঠকের ৪০তম প্লেনারি সভায় এই ঐতিহাসিক সুপারিশ গৃহীত হয়।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এক বিবৃতিতে এই ঐতিহাসিক অর্জনকে বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রার এক মহান মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বাংলাদেশের জাতির পিতা মহান স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণে তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বের মাধ্যমে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে।’
‘প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের যে অপ্রতিরোধ্য উন্নয়ন যাত্রা-এটি তারই একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। এই সাফল্যের অংশীদার এই দেশের সকল শ্রেণি পেশার মানুষ।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় দ্বিতীয়বারের মতো স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ বা গ্র্যজুয়েশনের মানদণ্ড পূরণের মাধ্যমে উত্তরণের সুপারিশ লাভ করেছিলো। সিডিপি একইসঙ্গে বাংলাদেশকে ২০২১ থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত ৫ বছরব্যাপী প্রস্তুতিকালীন সময় প্রদানের সুপারিশ করে। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ ইতোমধ্যে সিডিপির সুপারিশ অনুমোদন করেছে। আশা করা হচ্ছে যে, পাঁচ বছর প্রস্তুতিকালশেষে বাংলাদেশের উত্তরণ ২০২৬ সালে কার্যকর হবে।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেটি কিনা জাতিসংঘ নির্ধারিত উত্তরণের ৩টি মানদণ্ডই পূরণের মাধ্যমে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশের এই অর্জন বিশ্ব দরবারে এই দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে এবং আরও অধিকতর উন্নয়নের যাত্রাকে তরান্বিত করবে।
প্রস্তুতিকালীন এই সময়ে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে প্রাপ্ত সকল সুযোগ সুবিধা অব্যাহত থাকবে।
এ ছাড়া বর্তমান নিয়মে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বাজারে বাংলাদেশ ২০২৬ সালের পর আরও ৩ বছর অর্থাৎ ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত সুবিধা ভোগ করতে পারবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ এমন একটি সময়ে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে, যখন সমগ্র দেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্যাপন করছে।
উত্তরণ পরবর্তী সময়ে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধাগুলো অব্যাহত রাখাসহ মসৃণ ও টেকসই উত্তরণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নেতৃত্বে বেসরকারি খাত ও উন্নয়ন সহযোগীদেরসঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় নীতিকৌশল ও পদক্ষেপ প্রণয়ন করছে বলেই জানা গেছে।