৪ হাজার কনস্টেবল নেবে পুলিশ।

ডন প্রতিবেদন : বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগের জন্য চার মাসের মধ্যে আবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। নতুন করে ৬৪ জেলা থেকে ৪ হাজার কনস্টেবল নিয়োগ দেওয়া হবে। তাঁদের মধ্যে ৩ হাজার ৪০০ জন পুরুষ এবং ৬০০ জন নারী। উন্নত বাংলাদেশের উপযোগী করে পুলিশকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কনস্টেবল পদের নিয়োগ পরীক্ষার আধুনিকায়ন করা হয়েছে। নতুন নিয়মে কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য সাতটি ধাপ অনুসরণ করে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করা হবে। আবেদনের যোগ্যতা : আবেদনের জন্য বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক এবং অবিবাহিত হতে হবে। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে প্রার্থীর বয়স ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে হতে হবে। প্রার্থীকে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। ন্যূনতম জিপিএ ২ দশমিক ৫ থাকতে হবে। শারীরিক যোগ্যতা : সাধারণ ও অন্যান্য কোটার ক্ষেত্রে পুরুষ প্রার্থীর উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি হতে হবে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও মুক্তিযোদ্ধা (মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের সন্তান ব্যতীত) কোটার ক্ষেত্রে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। নারী প্রার্থীর উচ্চতা সাধারণ ও অন্যান্য কোটার ক্ষেত্রে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি হতে হবে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও মুক্তিযোদ্ধা কোটার ক্ষেত্রে ৫ ফুট ২ ইঞ্চি। পুরুষ প্রার্থীর বুকের মাপ সাধারণ ও অন্যান্য কোটার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি এবং সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩৩ ইঞ্চি। মুক্তিযোদ্ধা কোটার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি এবং সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি। যেভাবে আবেদন : আগ্রহী প্রার্থীদের অনলাইনে এ ওয়েবসাইটের police.teletalk.com.bd মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে আবেদন ফরম পূরণের সহায়ক হিসেবে ভিডিও টিউটরিয়াল এবং ফরম পূরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আবেদনের সময় : কনস্টেবল পদে গত মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে আবেদন শুরু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে আবেদন করা যাবে। আবেদনের শেষ সময় ২৮ ফেব্রুয়ারি, রাত ১১টা ৫৯ মিনিট। সাত ধাপে প্রার্থী নির্বাচন : ● ওয়েববেজড প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং: অনলাইনে আবেদনকারী প্রার্থীদের মধ্য থেকে নির্ধারিত নিয়োগবিধি অনুযায়ী ওয়েববেজড প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে পরবর্তী ধাপের জন্য বাছাই করা হবে। বাছাইকৃত প্রার্থীদের মুঠোফোন নম্বরে পরবর্তী ধাপে অংশগ্রহণের জন্য ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দেওয়া হবে। সেটি ব্যবহার করে পুলিশের ওয়েবসাইট থেকে শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও শারীরিক সহনশীলতা পরীক্ষার প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে হবে। ● শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও শারীরিক সহনশীলতা পরীক্ষা: ওয়েববেজড প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং ধাপে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত তারিখ, সময় ও স্থানে শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও শারীরিক সহনশীলতা পরীক্ষার জন্য উপস্থিত হতে হবে। এই ধাপে মোট তিন দিন প্রার্থীর যোগ্যতা যাচাই করা হবে। প্রথম দিনে ভেন্যুতে প্রবেশের পর প্রার্থীর উচ্চতা, ওজন ও বুকের মাপ এবং কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। এরপর দুই দিনে প্রার্থীকে সাতটি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করতে হবে। দ্বিতীয় দিনে হবে চারটি ইভেন্ট ২০০ মিটারের দৌড়, পুশ আপ, লং জাম্প ও হাই জাম্প। তৃতীয় দিনে হবে তিনটি ইভেন্ট ১৬০০ মিটারের দৌড়, ড্র্যাগিং ও রোপ ক্লাইমিং। ● লিখিত পরীক্ষা : বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত তারিখে বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞানের ওপর মোট ৪৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। ● মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা : লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত তারিখে ১৫ নম্বরের মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। ● প্রাথমিক নির্বাচন : জেলাভিত্তিক শূন্যপদ ও বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করে লিখিত, মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থীদের প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হবে। ● স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পুলিশ ভেরিফিকেশন : প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। রাজধানীর রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে এ পরীক্ষা নেওয়া হবে। শারীরিক পরীক্ষা–সংক্রান্ত তথ্যাদিসহ প্যাথোলজিক্যাল ইনভেস্টিগেশনে অংশগ্রহণ করতে হবে। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যোগ্য প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম পূরণ করতে হবে। পুলিশ ভেরিফিকেশন সন্তোষজনক হলে প্রশিক্ষণের জন্য মনোনীত করা হবে। তবে ভেরিফিকেশনে তথ্য গোপন বা মিথ্যা তথ্য দিলে প্রার্থী অযোগ্য বিবেচিত হবেন। ● চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্তকরণ : প্রশিক্ষণের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীরা প্রশিক্ষণকেন্দ্রে যোগদানের পর তাঁদের শারীরিক যোগ্যতাসহ অন্যান্য তথ্য আবার যাচাই করবে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত পুনর্বাছাই কমিটি। এসব তথ্যা যাচাই-বাছাই শেষে প্রার্থীকে চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। নির্ধারিত প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল হিসেবে ছয় মাস মেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে হবে। বেতন ও সুযোগ-সুবিধা : সাফল্যের সঙ্গে প্রশিক্ষণ শেষে ১৭তম গ্রেডে (৯,০০০-২১,৮০০) বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। দুই বছর শিক্ষানবিশ হিসেবে থাকতে হবে। শিক্ষানবিশ ঘোষণার তারিখ থেকে দুই বছর সন্তোষজনক চাকরি পূর্ণ হলে কনস্টেবল পদে স্থায়ী করা হবে। পুলিশ বাহিনীর নিয়ম অনুযায়ী উচ্চতর পদে পদোন্নতিসহ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। প্রস্তুতি সহায়ক : পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি (মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড পাবলিসিটি) মো. কামরুজ্জামান বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, গত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুন নিয়মে সাত ধাপে প্রার্থী বাছাই করে তিন হাজার কনস্টেবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এবারও নতুন নিয়মে প্রার্থী নির্বাচন করে চার হাজার কনস্টেবল নিয়োগ দেওয়া হবে। কনস্টেবল পদে নিয়োগের নতুন নিয়ম নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল ও ওয়েবসাইটে (www.police.gov.bd) একটি ভিডিও আপলোড করা হয়েছে। ভিডিওটিতে পরীক্ষার প্রতিটি ধাপ বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আগ্রহী প্রার্থীরা ভিডিওটি দেখে সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিতে পারেন।