স্বাস্থ্যমন্ত্রী : বিমানবন্দরে শনিবার থেকে করোনা পরীক্ষা করা যাবে

স্বাস্থ্যমন্ত্রী : বিমানবন্দরে শনিবার থেকে করোনা পরীক্ষা করা যাবে
ডন প্রতিবেদন : হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগামী শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে করোনার পরীক্ষা করা যাবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘আজ বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যারমধ্যে পরীক্ষাগারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ করা সম্ভব হবে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি যন্ত্র চলে এসেছে।’ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অস্থায়ী পরীক্ষাগার পরিদর্শন শেষে বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অবকাঠামো নির্মাণকাজের অগ্রগতি জানতে আজ সন্ধ্যার পর খোঁজ নেওয়া হয়। এ সময় বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, ‘সন্ধ্যারমধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো। তবে তা সম্ভব হয় নি। আশা করা যাচ্ছে, আজ রাতের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।’ ‘আমরা এ নিয়ে কাজ করছি।’ স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিমানবন্দরে আরটি পিসিআর পরীক্ষাগার বসানোর কাজ দ্রুততম সময়ে করতে আমি পরশু এসে এখানে জায়গা নির্ধারণ করে দিয়েছি। আশা করছি, সব ঠিক থাকলে আগামী শনিবারেরমধ্যেই বিদেশগামী দেশের লোকজন এই পিসিআর ল্যাবগুলো থেকে পরীক্ষা করে নির্বিঘ্নে বিদেশে যেতে পারবেন।’ পরীক্ষাগারের সংখ্যা কত ও দৈনিক কত মানুষ এই পরীক্ষাগার থেকে করোনার পরীক্ষা করতে পারবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, এখানে ৬টি পরীক্ষাগারে ১২টি বুথ বসানো হবে। এসব পরীক্ষাগারের মাধ্যমে প্রতিদিন অন্তত সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার মানুষের করোনার পরীক্ষা করানো যাবে। এখানে দ্রুততম সময়ে পরীক্ষার জন্য র‍্যাপিড পিসিআর ল্যাব এবং সাধারণ পরীক্ষার জন্য আরটি পিসিআর ল্যাব উভয়ই ব্যবহার করা যাবে। গত আগস্টে সংযুক্ত আরব আমিরাত সে দেশে যেতে যাত্রার ছয় ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে করোনার আরটি-পিসিআর পরীক্ষার শর্ত আরোপ করে। কিন্তু দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা করার ব্যবস্থা এত দিন ছিল না। এতে দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে যেতে পারেননি প্রবাসীরা। এর মধ্যে অনেকের ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। এর আগে ৬ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা শনাক্তে পিসিআর পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দেওয়া হয়। সে নির্দেশের ১৫ দিন পর গতকাল বুধবার বিমানবন্দরে অস্থায়ী ল্যাবে পরীক্ষামূলকভাবে করোনার পরীক্ষা করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৪৬ যাত্রীকে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গতকাল বিকেলে শাহজালাল বিমানবন্দরের টার্মিনালের দোতলায় স্বাস্থ্য বিভাগের সামনে ৪৬ যাত্রীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নমুনা সংগ্রহের পর টার্মিনালের নিচতলায় অস্থায়ী পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা শেষে ওই ৪৬ জনের নেগেটিভ ফল আসে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে করে তাঁরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা হন। গতকাল দিবাগত রাতে তাঁরা সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছান। শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইটটি অবতরণের পর আমিরাত কর্তৃপক্ষ আবার এসব যাত্রীর করোনা পরীক্ষা করে। পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসায় তাঁরা দেশটিতে প্রবেশের সুযোগ পান। বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, বিমানবন্দরে পার্কিং ভবনের ছাদে করোনার পরীক্ষাগার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে এতে আপত্তি ছিল পরীক্ষাগার স্থাপনে নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানগুলোর। এই সংকট নিরসনে অস্থায়ীভাবে নতুন স্থান নির্ধারণ করা হয়। গতকাল পরীক্ষাগার স্থাপনের কাজ শুরু হয়। দীর্ঘদিন ধরে বিমানবন্দরে করোনার পরীক্ষাগার স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন প্রবাসীরা। ১৪ সেপ্টেম্বর এ দাবিতে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নিচে প্রবাসীরা প্রতিবাদ করেন। ১৫ সেপ্টেম্বর সাত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার বসাতে নির্বাচিত করে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ছয়টি প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) জমা দেয়। এসব এসওপি যাচাই করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাঠানো হয়। বিমানবন্দরে করোনার পরীক্ষা করার অনুমতি পেয়েছে স্টেমজ হেলথ কেয়ার (বিডি) লিমিটেড ঢাকা, সিএসবিএফ হেলথ সেন্টার, এএমজেড হাসপাতাল লিমিটেড, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গুলশান ক্লিনিক লিমিটেড ও ডিএমএফআর মলিকুলার ল্যাব অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক।