শ্রমিকদের পাওনা আদায়ে সহযোগিতার কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী।

শ্রমিকদের পাওনা আদায়ে সহযোগিতার কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী।
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : শ্রমিকদের পাওনা আদায়ে সহযোগিতা কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। তবে শ্রমিক নেতাদের বিদেশ প্রীতির প্রতি বিষোদগার করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের জন্য এতো কাজ করার পরও কিছু শ্রমিকনেতা বিদেশিদের কাছে নালিশ করতে পছন্দ করেন। জানি না, এখানে অন্য কোনও স্বার্থ বা দেনা-পাওনার ব্যবস্থা আছে কিনা। ‘নিজের দেশের সস্পর্কে অন্যের কাছে না বলে, কোনও দাবি-দাওয়া থাকলে আমাকে জানান।’ মহান মে দিবস উপলক্ষে ঈদের ছুটির পর রোববার (৮ মে) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে অনেক শিল্প মালিক ঠিক মতো টাকা দেন না। এটা দুঃখজনক। যে কোনও প্রতিষ্ঠান চালাতে গেলে মালিকের যেমন শ্রমিকের ওপর দায়িত্ব থাকবে, তেমনি শ্রমিকেরও মালিকের ওপর দায়িত্ব থাকবে। শ্রমিকরা সুস্থ পরিবেশ পাচ্ছে কিনা, সেটা মালিকদের দেখতে হবে। তাতে উৎপাদনও বাড়বে, মালিক-শ্রমিক উভয়ই লাভবান হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রমিক, দিনমজুর তথা খেটে খাওয়া মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করার জন্যই আমাদের রাজনীতি। সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। আমরা মানুষের কথা ভাবি, মানুষের কল্যাণে কাজ করি। বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে, তখনই এ দেশের শ্রমিকদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য, কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য, মেহনতি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমরা সব সময় চেষ্টা করেছি। তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমি যে সুখী ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছি, সংগ্রাম করেছি এবং দুঃখ ও নির্যাতন বরণ করেছি, সেই বাংলাদেশ এখনও আমার স্বপ্নই রয়ে গেছে। গবিব কৃষক ও শ্রমিকের মুখে যতোদিন হাসি না ফুটবে, ততোদিন আমার মনে শান্তি নেই। এই স্বাধীনতা আমার কাছে তখনই প্রকৃত স্বাধীনতা হয়ে উঠবে, যেদিন বাংলাদেশে কৃষক, মজুর ও দুঃখী সব মানুষের দুঃখের অবসান হবে। এতোটুকুই বলতে চাই, জাতির পিতার এই আদর্শই আমাদের আদর্শ। আর এই আদর্শ নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। জাতির পিতার স্বপ্নের সেই সোনার বাংলাদেশ আমরা ইনশাল্লাহ গড়ে তুলবো। শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ তিনি গড়ে তুলেছেন। ওই অবস্থাতেও তিনি আইএলও কনভেনশনে যে সব প্রোটোকলে স্বাক্ষর করেছেন, তা অনেক উন্নত দেশও করতে সক্ষম হয় নি। কিন্তু একটা বিধ্বস্ত বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে এ দায়িত্বটা নেওয়া বা আইএলওর সদস্যপদ পাওয়া একটা কঠিন কাজ ছিলো। কিন্তু সহজভাবেই জাতির পিতা তা করতে সক্ষম হয়েছিলেন কেবল তাঁর নীতির কারণেই। সরকারপ্রধান আরও বলেন, আমাদের দেশ উন্নত করতে হলে শ্রমিক শ্রেণির অবদানটা গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শ্রমিকদের জন্য সারাজীবন কাজ করে গেছেন। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে শ্রমজীবীদের উন্নয়নে নানা কাজ শুরু করি। এ দেশের সব শ্রেণির মানুষের জন্যই আমরা কাজ করি। শিশুশ্রম বন্ধ করতে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। সেক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করেছি। মে দিবস সবার জন্য কল্যাণ বয়ে আনুক। সব শ্রমজীবী মানুষকে আমার অভিনন্দন জানাই।