নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত হলো ‘গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট’। গত শুক্রবার (৬ মে) রাত ৮টার পর বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এ পর্বে নেতৃত্ব দেন স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী কাদেরি কিবরিয়া। বাঙালিদের সঙ্গে কণ্ঠ মেলান সেখানে উপস্থিত হাজার হাজার বিদেশিও। অংশগ্রহণকারীরা ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে অনুষ্ঠানস্থল প্রকম্পিত করে তোলেন। শুরুর পর্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন চিত্র উপস্থাপন করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, অপরাজিতা হক ও নুরুল আমিন দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতে অংশ নেন।
তবে ‘দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ এর দুই উদ্যোক্তা জর্জ হ্যারিসন কিংবা পণ্ডিত রবিশঙ্করের পরিবারের কেউ সুবর্ণজয়ন্তীর এ আয়োজনে ছিলেন না বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশি শরণার্থীদের সাহায্যে এবং বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত সুসংহত করতে এই ম্যাডিসন স্কয়ারে অনুষ্ঠিত হয় ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’। ঐতিহাসিক এই কনসার্টের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ‘গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট’ আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের চিরকুট ব্যান্ডের শারমিন সুলতানা সুমি ছয়টি গান পরিবেশন করেন। সুমির সঙ্গে যন্ত্র সংগীতে ছিলেন ইমন চৌধুরী ও জাহিদ নিরব। এরপর জার্মানির রক ব্যান্ড স্করপিয়ন্স মঞ্চে এক ঘণ্টারও বেশি সময় গান পরিবেশন করে। এই ব্যান্ডের শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন ক্লাউস মেইন, রুডল্ফ শেঙ্কার, মিক্কে ডি, মাইকেল শেঙ্কার, ম্যাথিয়াস জাবস।
কনসার্ট উপলক্ষে ২০ হাজার আসনবিশিষ্ট মিলনায়তনের অধিকাংশই পরিপূর্ণ ছিলো। দর্শক সারিতে বেশিরভাগ ছিলেন আমেরিকান। বিমুগ্ধচিত্তে তাঁরা পুরো অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের শতাধিক মুক্তিযোদ্ধাও উপস্থিত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি মালিকানাধীন ‘প্রথম ও একমাত্র ইউনিভার্সিটি’ ‘আই-গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি’র চ্যান্সেলর ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিফ বলেন, ঐতিহাসিক সেই কনসার্ট স্মরণে এ আয়োজনের গুরুত্ব অপরিসীম ছিলো। এই কনসার্টকে আরও ভালোভাবে কাজে লাগানো সম্ভব ছিলো।
বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুর আহমেদ বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘খুব ভালো লাগছে, ৫০ বছর আগে যে বিষয়টি আমরা মিস করেছি, যে সম্পর্কে শুনছি, ইতিহাসে পড়ছি, সেই কনসার্টের স্মরণে আজকের এ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে নিজেকে গৌরবান্বিত বোধ করছি।’