শুক্রবারের বিশেষ : রাজবাড়ীর দুর্গাপূজার বড় আকর্ষণ ১৫ খণ্ড অবতার

শুক্রবারের বিশেষ : রাজবাড়ীর দুর্গাপূজার বড় আকর্ষণ ১৫ খণ্ড অবতার

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলার কাগজ; স্বপন বিশ্বাস, রাজবাড়ী : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ উৎসব আদিকাল থেকেই পালন ও উদ্‌যাপন করে আসছেন এ সম্প্রদায়ের মানুষেরা। এবার ১৫ খণ্ড অবতার নিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার আকর্ষণ রয়েছে রাজবাড়ী জেলা শহরের পাশে পুরাতন হরিসভা মন্দির এলাকার ধুঞ্চী গ্রামে।

পূজার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। এরই মধ্যে আনন্দের বাতাস বইতে শুরু করেছে সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষের ঘরে ঘরে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শিল্পীরা প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করেছেন। এখন শুধু রঙ-তুলি দিয়ে দেবী দুর্গাকে সাজানোর অপেক্ষা। কিছু কিছু পূজামণ্ডপে রঙ-তুলিতে সাজানোও শুরু হয়ে গেছে।

পূজোকে উৎসবমুখর করতে সকলেই নতুন কাপড়-চোপড় কিনতে ব্যস্ত। আবার প্রায় সকলেই অতিথি আপ্যায়নের জন্য নারু, মুড়ি ও খই তৈরিতে ব্যস্ত।

পহেলা অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে শুরু হচ্ছে সারদীয় দুর্গোৎসব। পূজো শেষ হবে ৫ অক্টোবর। ওইদিন বিসর্জন করা হবে। এবার দুর্গা মা আসছেন হাতিতে চরে আর যাবেন নৌকায় চরে।

সরেজমিনে দেখা গেলো, এবার ১৫ খণ্ড অবতার নিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার আকর্ষণ রয়েছে রাজবাড়ী জেলা শহরের পাশে পুরাতন হরিসভা মন্দির এলাকার ধুঞ্চী গ্রামে। ১৫ খণ্ড প্রতিমার কারিগর কুমারেশ পালের সঙ্গে কথা বললে, তিনি বাঙলার কাগজ ও ডনকে জানান, প্রতিমা তৈরির সব কাজ শেষ। শুধু বাকি রঙের কাজ। তবে পূজা শুরুর ৪ থেকে ৫ দিন আগে রঙের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। সবমিলে পারিশ্রমিক নিয়ে খুশি বলেই জানালেন এই প্রতিমা শিল্পী।

অবশ্য পূজামণ্ডপ কমিটির সভাপতি শ্রীকান্ত বিশ্বাস (রাহুল)-এর সঙ্গে কথা বললে, তিনি বাঙলার কাগজ ও ডনকে জানান, গত কয়েক বছর যাবৎ এখানে ৮৬ খণ্ড অবতার নিয়ে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হচ্ছে। যাতে খরচ হয় ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা। এবারও বৃহৎ পরিসরে পূজা করার ইচ্ছে থাকলেও বাজেট সংগ্রহে কষ্টসাধ্য হওয়ায় এবং স্থায়ীভাবে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে এবার ১৫ খণ্ড অবতার নিয়ে দুর্গাপূজার আয়োজন করেছি। তবে বড় অনুদান পেলে আগামীতে ৮৬ খণ্ড অবতার নিয়ে দুর্গাপূজা করবো। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই মণ্ডপে পূজা দেখার জন্য মানুষের ঢল থাকবে চোখে পড়ার মতো।

‘কারণ শহরের আশেপাশে বৃহৎ পরিসরে দ্বিতীয়টি হচ্ছে না।’

এ ছাড়া জেলা পৌর শহরের কয়েকটি পূজামণ্ডপের প্রতিমাশিল্পী আনন্দ পাল ও সৌরভ সরকারের সঙ্গে কথা বললে, তাঁরা জানান, আমাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রতিমা তৈরির কাজকে মৌসুমী ব্যবসা হিসেবে নিয়েছেন। সবমিলে আমরা খুশি।

রাজবাড়ী সদর উপজেলা পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সভাপতি অরুন সরকারের সঙ্গে কথা বললে, তিনি বাঙলার কাগজ ও ডনকে জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও রাজবাড়ী জেলার পাঁচটি উপজেলায় মোট ৪৬১টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবং সদর উপজেলায় রয়েছে ১০৬টি পূজামণ্ডপ।

তিনি বলেন, জেলা পূজা উদ্‌যাপন কমিটির পক্ষ থেকে কিছু কিছু পূজামণ্ডপে আর্থিক সহায়তা করা হবে।

অরুন সরকার জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে জেলার ৫টি উপজেলায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গাপূজা উদ্‌যাপনের জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মন্দিরে মন্দিরে সিসি ক্যামেরাসহ থাকবেন আনসার বাহিনী সদস্যরা।

এ ছাড়া পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য মণ্ডপে মণ্ডপে টহল জোরদার করবেন।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আ. রব বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বললে, তিনি বাঙলার কাগজ ও ডনকে জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও তিনি তাঁর রাজবাড়ী পৌরসভার প্রতিটি পূজামণ্ডপ ঘুরে ঘুরে খোঁজ-খবর নেবেন।