বড় চালান আটক : আইসের উৎসও মিয়ানমার : কারবারে বিদেশফেরতরা

বড় চালান আটক : আইসের উৎসও মিয়ানমার : কারবারে বিদেশফেরতরা
ডন প্রতিবেদন : ইয়াবা কারবারিরা মিয়ানমার থেকে ভয়ানক মাদক আইস নিয়ে আসছে জানিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বলছে, এ কারবারে জড়িত পড়ছে বিদেশফেরত উচ্চশিক্ষিতরা। অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুর রহমান শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন। রাজধানির গুলশান, বনানী, রমনা ও ভাটারা থানা এলাকায় বুধ ও বৃহস্পতিবার কয়েক দফা অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এসব অভিযানে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অধিদপ্তর জানায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় ৫৬০ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ (আইস), ১ হাজার ২০০টি ইয়াবা বড়ি এবং দুইটি প্রাইভেটকার। তাদের নামে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়েছে। অভিযানের বিষয়ে জানাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুর রহমান জানান, শুধু ঢাকা বিভাগেই মাদক কারবারির সংখ্যা সাড়ে ৩ হাজার। তিনি জানান, ইয়াবা কারবারিরাই মিয়ানমার থেকে নাফ নদী দিয়ে আইস নিয়ে আসছে দেশে। এ মাদকের কারবারে যুক্ত হচ্ছে বিত্তবানরা। তাদের কেউ কেউ বিবিএ করেছেন ইংল্যান্ডে, কেউ পড়েছেন অস্ট্রেলিয়ায়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ধনাঢ্য পরিবারের সন্তানরা রাজধানীর অভিজাত এলাকায় করছেন মাদকের কারবার। তারা সেবনের পাশাপাশি আইস কারবারের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ফজলুর বলেন, ‘২১ আগস্ট প্রায় আধা কেজি আইসসহ বনানী-উত্তরাকেন্দ্রিক ১০ সদস্যের একটি নেটওয়ার্ককে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন গোয়েন্দা কৌশল ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে গুলশান, ভাটারা, কুড়িল, রমনা এলাকায় আইসের আরও একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ককে আমরা শনাক্ত করতে সক্ষম হই।’ তিনি বলেন, ‘রমনা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জাকারিয়া আহমেদ অমনকে পাঁচ গ্রাম আইসসহ গ্রেপ্তার করা হয়। জাকারিয়ার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বারিধারার দূতাবাস এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তারেক আহম্মেদকে পাঁচ গ্রাম আইস ও ১০০টি ইয়াবা ও একটি প্রাইভেটকারসহ গ্রেপ্তার করা হয়।’ ‘জাকারিয়া ও তারেকের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সাদ্দাম হোসেনকে ৯০ গ্রাম আইস ও ৪০০টি ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়।’ গ্রেপ্তারের বিষয়ে ফজলুর আরও বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে শহীদুল ইসলাম খানকে একই এলাকা (কুড়িল বিশ্বরোড) থেকে ২০০ গ্রাম আইস ও ৫০০টি ইয়াবা, একটি প্রাইভেটকারসহ গ্রেপ্তার করা হয়।’ ‘আসামিদের তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জোয়ার সাহারা, ভাটারা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জসিম উদ্দিনকে ২৬০ গ্রাম আইস ও ২০০টি ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়।’ সাড়ে তিন হাজার মাদক কারবারিকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না, এমন প্রশ্নের জবাবে ফজলুর বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে সাক্ষী ও প্রমাণ না থাকায় অনেককেই ধরা সম্ভব হচ্ছে না।’ ‘তারা নিজেদের কাছে মাদক রেখে কারবার করেন না; দূর থেকে টাকা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করেন। আমরা তাদের গোয়েন্দা নজরদারিতে রেখেছি।’