বড় ঋণখেলাপিদের ক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায় না : চেম্বার বিচারপতি

বড় ঋণখেলাপিদের ক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায় না : চেম্বার বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন : পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় ২৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়ার অভিযোগে কৃষকদের কোমরে দড়ি বেঁধে নিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ এক শুনানিতে টেনেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। তিনি বলেছেন, ‘দুই দিন আগে পত্রিকায় দেখলাম, ২৫ হাজার টাকার জন্য সাধারণ কৃষকের কোমরে দড়ি বেঁধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অথচ যাঁরা বড় বড় ঋণখেলাপি, যাঁদের কাছে লক্ষ-কোটি টাকা পাওনা, তাঁদের ক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায় না।’

ঋণের বিপরীতে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট (এনআই) অ্যাক্টে চেক ডিজঅনার (প্রত্যাখান) মামলা করতে পারবে না বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে করা আবেদনের শুনানিতে সোমবার (২৮ নভেম্বর) আদালত এ কথা বলেন।

চেক ডিজঅনার মামলায় বিচারিক আদালতে দণ্ডিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের বরাইল গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলীর আপিল মঞ্জুর করে ২৩ নভেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন। এ রায় স্থগিত চেয়ে ব্র্যাক ব্যাংক আবেদন করে। আদালতে ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী। মোহাম্মদ আলীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুল্লা আল বাকী।

শুনানিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘এটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় বিষয়। কোনও ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যক্তির বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনারের মামলা করতে পারবে না বলে হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ঋণ হিসাবের বিপরীতে ঋণগ্রহীতাকে বিমাসুবিধা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিম্ন আদালতে এ-সংক্রান্ত বিচারাধীন মামলা স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। এতে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে।’

তখন আদালত বলেন, ‘হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় আসে নি, রায় আসুক।’ শুনানির একপর্যায়ে আদালত বলেন, ‘এসব চেকে (ঋণ দেওয়ার পর গ্রহীতার কাছ থেকে নিরাপত্তা হিসেবে যে চেক নেওয়া হয়) তারিখ থাকে না, টাকার অঙ্কও থাকে না। কে টাকার অঙ্ক বসায়, তাঁরও হদিস থাকে না। এটি কতটুকু নৈতিক? এ ধরনের চেক না নিতে ইতিপূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলারও দিয়েছে। এই সার্কুলার কেনো প্রতিপালন হচ্ছে না?’

একপর্যায়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আমিন উদ্দিন হাইকোর্টের রায় স্থগিতের আরজি জানান। পরে আদালত ব্র্যাক ব্যাংকের আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ১ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করেন।