প্রধানমন্ত্রী : যতোই ঝুঁকি আসুক, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে

প্রধানমন্ত্রী : যতোই ঝুঁকি আসুক, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে
বাসস : সকলকে দুর্যোগের ঝুঁকি বিষয়ে সতর্কতারসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, যতোই ঝুঁকি আসুক, দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই দেশটা আমাদের, কাজেই যতো ঝুঁকি আসুক দেশের উন্নয়ন আমাদেরকে অব্যাহত রাখতে হবে। দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে হবে। দারিদ্রের হাত থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে হবে।’ বঙ্গবন্ধুকন্যা জাতির পিতার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ থেকে সেই বিখ্যাত উক্তি ‘আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবানা’র উদ্ধৃতি তুলে ধরে বলেন, ‘যতো দুর্যোগই আসুক বাঙালিকে, বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবেনা- এটাই হচ্ছে আমাদের কথা।’ শেখ হাসিনা বুধবার (১৩ অক্টোবর) সকালে ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি’র (সিপিপি) ৫০ বছরে পদার্পণ ও আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২১ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানির ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের অপরপ্রান্তে মুক্তিযোদ্ধা মাঠ কক্সবাজার প্রান্তও সংযুক্ত ছিলো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সারাবিশ্বে আজকে দুর্যোগ ঝুঁকি মোকবিলায় একটি আদর্শ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। আমাদের এই সম্মান যাতে বজায় থাকে সেজন্য ভবিষ্যতে সে বিষয়েও সকলকে সচেতন থাকতে হবে এবং এই ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি এ সময় ’৯১ সালের ঘুর্ণিঝড়ের পর আওয়ামী লীগের সংসদে এই নিয়ে কথা তোলার প্রেক্ষিতে সে সময়কার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার উক্তি ‘যতো মানুষ মরার কথা ছিলো, ততো মানুষ মারা যায় নাই’ উল্লেখ করে বলেন, এই কথা জীবনে যেনো আর শুনতে না হয়, সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে এবং মানুষকে সচেতন করতে হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহসীন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে চারটি ইউনিটের উদ্বোধন করেন। এগুলো হলো : দ্রুত সাড়াদান ইউনিট, পানি থেকে উদ্ধার ইউনিট, অতি জোয়ার মনিটরিং ও সাড়াদান ইউনিট এবং খেলায় খেলায় দুর্যোগ প্রস্তুতি ইউনিট (স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে জনসচেতনতামূলক)। এ ছাড়া, ‘দুর্যোগ সহনশীল বাংলাদেশ বিনির্মাণে শেখ হাসিনা’ শীর্ষক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক একটি গ্রন্থেরও মোড়ক উন্মোচন করেন শেখ হাসিনা। পাশাপাশি দুর্যোগ প্রশমন বিষয়ক আওয়ামী লীগ সরকারের প্রচেষ্টা সম্পর্কিত ভিডিওচিত্র ‘দুর্যোগ প্রশমনের ৫০ বছর বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা’ শীর্ষক ভিডিওচিত্রও অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয়। সিপিপি’র ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৩ জন সংগঠক এবং ৬ জন স্বেচ্ছাসেবক নারী-পুরুষকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ডা. এনামুর রহমান অনুষ্ঠানে আজীবন সম্মাননা প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস গণভবন প্রান্ত থেকে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যগণ, ৩ বাহিনী প্রধানগণসহ সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ, বিদেশি কূটনিতিক ও মিশন প্রধান, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সিপিপি’র স্বেচ্ছাসেবকদের দলে নারী স্বেচ্ছাসেবক অন্তর্ভুক্ত করায় এই কর্মসূচি অতীতের থেকে আরও বেশি কার্যকর হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কোনও প্রাকৃতিক দূর্যোগের ঝুঁকি থেকে যাতে আমরা মুক্ত হতে পারি, সেই ব্যবস্থা আমরা সবসময় নেবো। জাতির পিতার পদাঙ্ক অণুসরণ করে মানুষকে দুর্যোগ নিরাপত্তা প্রদানসহ মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণেও তাঁর সরকার উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান আরও বলেন, আগামীতে বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে যে এগিয়ে যাবে, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি রেখেই আমরা বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করে দিয়ে গেলাম। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের পাশে আছে। দুর্যোগে আর কেউ না থাকুক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সবসময় পাশে রয়েছে। তিনি এ সময় করোনাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা স্মরণ করে বলেন, মৃতের দাফন-কাফন থেকে শুরু করে তাঁদের ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজটা আমরা সরকারের পক্ষ থেকে যেমন করেছি, তেমনি দলের পক্ষ থেকেও করেছি। তবে আর কাউকেই এভাবে এগিয়ে আসতে আমি দেখি নাই।