দেশজুড়ে এবারের কালবৈশাখী শুরু। ঢাকায় ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি।

দেশজুড়ে এবারের কালবৈশাখী শুরু। ঢাকায় ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি।
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : দেশজুড়ে এবারের কালবৈশাখী শুরু হয়ে গেলো। ফলে মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দিবাগত রাতেই দেশজুড়ে ছিলো ঝড়ের কিছু ‘তাণ্ডব’ ও বৃষ্টি। যদিও আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাসে বৃষ্টির কথাই ছিলো। আর তা ফলেও গেলো। দেশের বিভিন্ন স্থানে আগের রাতে বৃষ্টি হলেও রাজধানীতে হলো সকাল সকাল। তাও আবার বজ্রসহ শিলাবৃষ্টি। ভোরের আলো ফোটার পর সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মেঘাচ্ছন্ন হয়ে আসে ঢাকার আকাশ। পৌনে ৭টার দিকে ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে শুরু হয় বজ্রপাত, এরপর শিলাবৃষ্টি। দেশের কয়েকটি এলাকায় মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে গত কয়েকদিন ধরে, ঢাকাতেও ছিলো দমবন্ধ গরম। সকালের বৃষ্টিতে রাজধানীতে স্বস্তি এনেছে খানিকটা। তবে বাতাস আর বৃষ্টির দাপট ঘণ্টাখানেকের বেশি স্থায়ী হয় নি। আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক বাঙলা কাগজ ও ডনকে জানান, ঢাকায় ঝড়ের সময় বিমানবন্দর আবহাওয়া স্টেশনে ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ রেকর্ড করা হয়। আর আগারগাঁও এলাকায় বাতাসের গতি উঠেছিলো ৫৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। ওই সময়টায় ঢাকায় ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সকালের কালবৈশাখী ঝড়ে ঢাকায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির কোনও তথ্য আসে নি ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষে। ডিউটি অফিসার লিমা খানম বাঙলা কাগজ ও ডনকে জানান, চন্দ্রিমা উদ্যান এলাকায় ঝড়ে গাছ পড়ে গেছে। দুয়েকটি জায়গায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার তথ্য এসেছিলো, পরে তা স্বাভাবিক হয়ে গেছে। এর আগে সন্ধ্যা রাতে সিলেটে এবং রাত সাড়ে ৩টার দিকে রংপুরে কালবৈশাখী ও বজ্রঝড় হয়। সেখানে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৭৮ কিলোমিটার। আর কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কালবৈশাখী বয়ে গেছে রাত থেকে ভোরের মধ্যে। আবুল কালাম মল্লিক আরও বলেন, ‘এ মৌসুমে দিনের শেষভাগে কালবৈশেখী হয়ে থাকে। অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।’ বুধবার সকালে ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বিজলি চমকানোসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। রাজশাহী, পাবনা, যশোর ও রাঙামাটি অঞ্চলের ওপর দিয়ে যে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, বুধবার তা প্রশমিত হতে পারে বলে আশা দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দেশের নদীবন্দরগুলোর জন্য সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য এলাকায় পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।