বিচার প্রার্থীকে মাদক সেবন করিয়ে ধর্ষণ করলেন চেয়ারম্যান!

বিচার প্রার্থীকে মাদক সেবন করিয়ে ধর্ষণ করলেন চেয়ারম্যান!
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলা কাগজ; অরিত্র কুণ্ডু; ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহে বিচার চাইতে গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও তাঁর গাড়িচালকের কাছে এক নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে সদর উপজেলার হরিশংকরপুর গ্রামের নরহরিদ্রা গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নারী বর্তমানে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জানা গেছে, কয়েক মাস আগে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পাগলা কানাই ইউনিয়নের কোড়াপাড়া গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে মহসীনের সঙ্গে ভুক্তভোগী ওই নারীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর প্রতারণার মাধ্যমে ওই নারীর কাছ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন মহসীন। এ ছাড়া ২ মাস আগে তাঁদের বিয়ের বিষয়টিও অস্বীকার করেন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মাতব্বরসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কাছে গেলেও কোনও সমাধান না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন ওই নারী। পরে গত ১৫ এপ্রিল তিনি পাশের হরিশংকরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদের কাছে যান। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ঘটনার দিন বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ফরিদ চেয়ারম্যানের গ্রামের বাড়ি হরিশংকরপুর ইউনিয়নের নরহরিদ্রা গ্রামে যান তিনি। কেউ না থাকার সুযোগে ফরিদ তাঁকে বাড়ির ভেতর ডেকে নিয়ে যান। আর ব্যক্তিগত গাড়িচালক শাহীনকে বলেন, বাড়িতে যেনো কেউ প্রবেশ না করে। পরে ওই নারীকে ইয়াবা ও গাঁজা সেবনের জন্য চাপাচাপি শুরু করেন চেয়ারম্যান। কিন্তু এতে রাজি না হলে ওই নারীকে মারধর ও জোর করে ইয়াবা ও গাঁজা সেবন করানোর চেষ্টা করা হয়। এক পর্যায়ে ফরিদ ও শাহীন তাঁকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের ফলে জ্ঞান হারান ওই নারী। পরদিন সকাল ১০টার দিকে কে বা কারা তাঁকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে রেখে যায়। বর্তমানে হাসপাতালেই ভর্তি আছেন তিনি। ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘আমি তখন ভয়ে কিছু বলতে পারি নি। আমাকে নির্যাতন করা হয়েছে। এখন আমি ডাক্তারের কাছে বলেছি। ডাক্তার আমার আগের ভর্তি বাতিল করে নতুন করে ভর্তি করার কথা বলেছে।’ ‘আমি ধর্ষক ফরিদ ও শাহীনের বিচার চাই।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদ বাঙলা কাগজ ও ডনের কাছে দাবি করেন, গত শুক্রবার বিকেলে মেয়েটি আমার কাছে বিচারের জন্য এসেছিলো। আমি তাঁর সঙ্গে কথা বলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেই। মেয়েটি যখন আসে এবং চলে যায় তখন আমার বাড়িতে প্রায় ৫০ জন লোক ছিলো। সবাই দেখেছে। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তার কোনও সত্যতা নাই। আসলে আমার সম্মানহানির জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ‘আমি এই ষড়যন্ত্রের তদন্ত দাবি করছি।’ এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। এখনও কোনও অভিযোগ পাই নি। ‘অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’