ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা।

ডন প্রতিবেদন : বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে সংগঠনটি। মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) সকাল ৭টার দিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে সংগঠনের নেতাকর্মীরা এ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শিক্ষা-শান্তি-প্রগতির পতাকাবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ (মঙ্গলবার : ৪ জানুয়ারি)। সকল বাধা পেরিয়ে গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ৭৫ বছরে পদার্পণ করলো দেশের সর্ববৃহৎ এই ছাত্র সংগঠনটি। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জন্মলগ্ন থেকে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনার সময়ও সারাদেশের নেতাকর্মীরা সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। ছাত্রলীগের গৌরবময় ইতিহাস-ঐতিহ্য সমুন্নত রেখেই কাজ করে যাচ্ছে। এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অঙ্গীকার হচ্ছে- গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্মের আলোকবর্তিকা নিয়ে কাজ করে যাওয়া। বাঙলা ও বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জন্ম হয়। উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ও প্রচীন ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ৭৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক পথপরিক্রমায় ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয়, ৫৮’র আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন এবং ৬৬’র ৬ দফার পক্ষে গণঅংশগ্রহণের মাধ্যমে মুক্তির সনদ হিসেবে এই দাবিকে প্রতিষ্ঠা করে। এরপর ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে কারাগার থেকে মুক্ত করে আনা, ৭০’র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়লাভ এবং ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পরাধীন বাংলায় লাল সবুজের পতাকার বিজয় ছিনিয়ে আনতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে অংশ নেয় ছাত্রলীগ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা সপরিবারে নিহত হওয়ার পর ছিনতাই হয়ে যায় স্বাধীনতার চেতনা ও গণতান্ত্রিক ধারা। ১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা (বর্তমান প্রধানমন্ত্রী) দেশে ফিরে স্বাধীনতার চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং গণতান্ত্রিক ধারা পুনরুদ্ধারে আন্দোলনের সূচনা করেন। ছাত্রলীগ ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অনন্য ভূমিকা পালন করে। সংগঠনটির ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বর্ণাঢ্যভাবে পালন করতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে ৫ দিনব্যাপি বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৭টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সকল সাংগঠনিক কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। অন্যান্য কর্মসূচিরমধ্যে রয়েছে ৫ জানুয়ারি বেলা সাড়ে ১১টায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে আলোচনা সভা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ সম্প্রচার হবে প্রতিটি জেলা, মহানগর ও উপজেলার দলীয় কার্যালয়ে। এ ছাড়া ৬ জানুয়ারি সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে পথশিশুদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ, বিকাল ৩টায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, ৭ জানুয়ারি বিকাল ৩টায় দুঃস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ এবং ৮ জানুয়ারি সকাল ১১টায় ঢাবির অপরাজেয় বাংলায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি পালন করবে সংগঠনটি। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঘোষিত কর্মসূচি যথাযথ মর্যাদায় পালন করতে ইউনিটের (জেলা, মহানগর, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ) নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।