কাঠগড়ায় ওসি প্রদীপের ফোনালাপের ঘটনায় ৩ পুলিশ প্রত্যাহার : তদন্ত কমিটি

কাঠগড়ায় ওসি প্রদীপের ফোনালাপের ঘটনায় ৩ পুলিশ প্রত্যাহার : তদন্ত কমিটি
ডন প্রতিবেদক, কক্সবাজার : কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণকালে আদালতের কাঠগড়ায় বসে মুঠোফোনে কথা বলেন মামলার অন্যতম প্রধান আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। মুঠোফোনে কথা বলার ওই ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর আদালতে দায়িত্ব পালনের সঙ্গে যুক্ত তিন কোর্ট পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই তিনজনের মধ্যে একজন উপপরিদর্শক (এসআই) ও দুজন কনস্টেবল। এ ঘটনা তদন্তে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগে ওই তিন পুলিশ সদস্যকে আদালত থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। আসামি প্রদীপ কুমার দাশের কাছে আদালতে কীভাবে মুঠোফোন গেল, তা তদন্ত করা হবে। প্রত্যাহার হওয়া তিন পুলিশ সদস্য হলেন এসআই শাহাব উদ্দিন, কনস্টেবল মো. আবদুস সালাম ও আবদুল কাদের। তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুপার (সদর সার্কেল) পঙ্কজ বড়ুয়া। অপর দুই সদস্য হলেন জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. শাহনেওয়াজ ও এএসপি (ট্রাফিক) মো. রফিকুর রাজা। গত সোমবার কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সিনহা হত্যা মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ চলছিল। এ সময় কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন প্রদীপসহ মামলার ১৫ আসামি। প্রদীপের পরনে ছিল কালো রঙের টি-শার্ট। ছড়িয়ে পড়া ছবিতে তাঁকে কালো রঙের টি-শার্ট পরে থাকতে দেখা যায়। তবে গতকাল মঙ্গলবার সাক্ষ্য গ্রহণের দ্বিতীয় দিন প্রদীপ আদালতে আসেন লাল রঙের টি-শার্ট পরে। আজ বুধবার (২৫ আগস্ট) তিনি আসেন নিল রঙের টি-শার্ট পরে। সোমবার সাক্ষ্য গ্রহণের কোনও এক ফাঁকে আদালতের কাঠগড়ায় বসে প্রদীপ মুঠোফোনে কথা বলেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ-সংক্রান্ত ছবিটি সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলেও ওই ছবি প্রচার করা হয়। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আদালত কক্ষের কাঠগড়ার ভেতরে হাঁটু গেড়ে বসে আছেন প্রদীপ। হাতে থাকা মুঠোফোনে কারও সঙ্গে তিনি কথা বলছিলেন। এ সময় কয়েকজন ব্যক্তি তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন প্রত্যক্ষদর্শি বলেন, মুঠোফোনে ওসি প্রদীপ লম্বা সময় কথা বলেন। সম্ভবত তিনি বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। কথা বলার জন্য মুঠোফোনটি ওসি প্রদীপকে সরবরাহ করেন দায়িত্বরত একজন পুলিশ সদস্য। ছড়িয়ে পড়া ছবিটির বিষয়ে আদালতে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ফরিদুল আলম বলেন, মুঠোফোনে কথা বলার ছবিটি সোমবার সাক্ষ্য গ্রহণের দিনের হতে পারে। কে বা কারা এই ছবি তুলেছে, তা অজানা। কাঠগড়ায় মুঠোফোনে ওসি প্রদীপ কথা বলার বিষয়টি তিনি আদালতের নজরে আনবেন।