এমপি বাবুর সম্পদের পাহাড়

এমপি বাবুর সম্পদের পাহাড়

ডেস্ক রিপোর্ট, বাঙলার কাগজ : নজরুল ইসলাম বাবু। নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনের সংসদ সদস্য। এক সময় করতেন জাতীয় পার্টির ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্রসমাজ। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার পতনের পর যোগ দেন ছাত্রলীগে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার পর পেয়ে যান কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক পদ। এরপর ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান। সেই থেকে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য।

পদ আর ক্ষমতার সঙ্গে জ্যামিতিক হারে বেড়েছে নজরুল ইসলাম বাবুর সম্পদের পরিমাণ। তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা এখন শত শত কোটি টাকার মালিক। দেশে বিপুল সম্পদের পাশাপাশি মালয়েশিয়ার রাজধানীর কুয়ালালামপুরেও ডুপ্লেক্স বাড়ি, বাণিজ্যিক প্লট ও কোম্পানি আছে বাবুর। লন্ডনেও এক আত্মীয়ের নামে ফ্ল্যাট কিনেছেন। কুয়ালালামপুরের বাড়ি ও বাণিজ্যিক প্লটে বিনিয়োগ সম্পর্কে জানা গেলেও কোম্পানিতে কত টাকা বিনিয়োগ করেছেন আর তা করতে গিয়ে কত টাকা দেশ থেকে পাচার করেছেন, সে তথ্য অবশ্য নিশ্চিত হওয়া যায় নি।

সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রাথমিক তদন্তে বেশ কিছু প্রমাণও পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সে সংক্রান্ত নথিপত্র ও নিজস্ব অনুসন্ধানে উঠে এসেছে বাবু ও তার পরিবারের বিপুল পরিমাণ সম্পদের চিত্র। তবে এসব তথ্যকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মিথ্যা প্রচার উল্লেখ করে নজরুল ইসলাম বাবুর দাবি, সব মিলিয়ে মাত্র সাড়ে ৪ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে তার। একাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় অবশ্য নজরুল ইসলাম বাবু মোট সম্পদ দেখিয়েছেন ৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬৯ হাজার টাকার। বার্ষিক আয় ১৯ লাখ ৪০ হাজার এবং ব্যয় ১৭ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর দেওয়া হলফনামায় এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়।

জানা গেছে, কয়েক বছর আগে বাবুর বিরুদ্ধে আড়াইহাজারে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি তদন্ত করলেও ২০১৮ সালের মার্চে তাকে দায়মুক্তি দেয় দুদক। সেই দুদকই আবার ২০১৯ সালের শেষের দিকে বাবু ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির অনুসন্ধান নতুন করে শুরু করে। দুদকের বিশেষ তদন্ত শাখা-২ এই অনুসন্ধান চালাচ্ছে। নথি নম্বর-১০১। অনুসন্ধান কর্মকর্তা হলেন মশিউর রহমান। অজ্ঞাত কারণে এখনো আলোর মুখ দেখে নি সেই অনুসন্ধান। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাননি অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিজেও।

২০০৮ সালে নির্বাচনি হলফনামায় নজরুল ইসলাম বাবু পেশা হিসেবে ‘ঠিকাদার’ উল্লেখ করলেও ২০১৪ ও ২০১৮ সালের হলফনামায় আমদানিকারক ও সরবরাহকারী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। আড়াইহাজার উপজেলা ও কৃষি অফিস থেকে পাওয়া দুটি নথিতে দেখা যায়, মাছ ও ফুল ব্যবসায় বিনিয়োগ আছে বাবুর। তবে বাবুর মাছ কিংবা ফুল ব্যবসা সম্পর্কে কোনও তথ্য জানেন না তার এলাকার কেউ।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) তথ্য অনুযায়ী, নজরুল ইসলাম বাবু ও তার পরিবারের সদস্যরা চারটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো মেসার্স সূচনা ডায়িং অ্যান্ড প্রিন্টিং, মেসার্স স্টার ট্রেডিং কোম্পানি, মেসার্স বাবু এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স সূচনা ডায়িং প্রিন্টিং ওয়েবিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।

জানা গেছে, দুই ভাই, দুই ভগ্নিপতি, এক ভাগ্নে রাজীব, শাশুড়ি এবং দুই বন্ধুর কাছেও আছে বাবুর বিপুল পরিমাণ সম্পদ। এক ভাই ও এক বন্ধুর নামে পরিচালিত ব্যবসার নেপথ্যেও আছেন সংসদ সদস্য বাবু। কেমিক্যাল পণ্য আমদানিকারক ও সরবরাহকারী হিসেবে পরিচিতি তাদের।

অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের ৯৭ পার্সিয়ারাও দোতা, দোতা নুসানতারা শ্রী হাউতোমাস এলাকায় একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি কিনেছেন সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু। ৫ লাখ ৫ হাজার ৩১৩ ‍মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ কোটি ১৯ লাখ ২০ হাজার ৩৩৩ টাকায় বাড়িটি কেনা হয়েছে। কুয়ালালামপুরের পেরিনডাসট্রেইন, নিলাই-২, সেরেমবানে নজরুল ইসলাম বাবু ও তার স্ত্রী সায়মা আফরোজ ইভার নামে আছে একটি বাণিজ্যিক প্লট। ৪ লাখ ৩৫ হাজার ১৫৬ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ কোটি ২ লাখ ৬৫ হাজার ৩৩০ টাকায় প্লটটি কেনা হয়। এ ছাড়া কুয়ালালামপুরের জালান ডি আইএমবিআই ঠিকানায় মাজু মুহিব্বাহ নামে নজরুল ইসলাম বাবুর একটি কোম্পানি আছে। কোম্পানির নিবন্ধন নম্বর ৮৮৮৫৬-এইচ।

আমাদের হাতে থাকা নথিতে ডুপ্লেক্স বাড়ি এবং বাণিজ্যিক প্লটে বাবু ও তার স্ত্রীর বিনিয়োগ উল্লেখ রয়েছে। তবে কোম্পানিতে কত টাকা বিনিয়োগ আছে, তার উল্লেখ নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), নির্বাচনী হলফনামা ও দুদকে জমা দেওয়া নথির কোথাও মালয়েশিয়ার এসব সম্পদের তথ্য উল্লেখ নেই।

অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মালয়েশিয়ার আমপাং প্রদেশেও আছে বাবু ও তার স্ত্রীর সম্পদ। এ ছাড়া প্রবাসী এক আত্মীয়ের নামে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন বাবু।

দেশে বাবুর যত সম্পদ :
অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য বলছে, ঢাকার গুলশান-১ এ ১৫ নম্বর সড়ক, প্লট নম্বর-১-এ র‌্যাংগস ওয়াটার ফ্রন্টে আছে নজরুল ইসলাম বাবুর ৪ হাজার ২০০ বর্গফুটের বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। ফ্ল্যাট নং-২সি। ৮৮ শান্তিনগরে ইস্টার্ন পিয়ারে আছে একটি ফ্ল্যাট। রমনা থানার সিদ্ধেশ্বরীর ৬৭, হাফিজ এস্টেটে আছে ২ হাজার ১৭০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল উপশহরে বাবুর আছে ১০ কাঠার প্লট। ৬১ বিজয়নগরে ইস্টার্ন আরজু নামে একটি ভবনের মালিক বাবু। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্স-২ এ বাবুর আছে ৪টি দোকান (৮/১২, ৮/৪, ৮/৩৪ ও ৮/৩৯)। এ ছাড়া এই শপিং কমপ্লেক্সের আন্ডারগ্রাউন্ডে অবস্থিত ৪টি গোডাউনের মালিকও তিনি। গুলশান সিটি করপোরেশন মার্কেটে সাতটি দোকান আছে বাবুর। শান্তিনগরেও বাবুর আছে একটি ভবন। বাড়ি নম্বর ৯০/৯১। শেরেবাংলা নগরের ১৬৩ পূর্ব রাজাবাজারে বাবুর আছে আরও একটি ফ্ল্যাট। বাবুর ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত এক ব্যক্তির নামে কেনা হয়েছে ফ্ল্যাটটি। সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির ২৫ শতাংশ মালিকানা বাবু ও তার স্ত্রীর নামে।

সরেজমিন জানা গেছে, আড়াইহাজার চৌরাস্তায় স্থানীয় এক বাসিন্দার ৯৯ শতাংশ জায়গা প্রথমে দখলে নেন বাবু। পরে এক বোনের নামে এই জমি রেজিস্ট্রি করেন। আড়াইহাজার সদরে লোকনাথ ব্রক্ষ্মচারীর আশ্রমের সামনে একটি পুকুর দখলে রেখেছেন বাবু। বাঘানগরের স্থানীয় এক বাসিন্দা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ১০ বিঘা জমি দখলে আছে তার। মুকুন্দী গাজীপুরায় স্থানীয় এক বাসিন্দা ও আত্মীয়স্বজনের ৮ বিঘা জমির দখলদারও তিনি। কৃষ্ণপুরায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জায়গা দখল করে মায়ের নামে স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন বাবু। কামরাঙ্গীর চর এলাকায় সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখলের পর রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন। গাজীপুরায় স্থানীয় এক বাসিন্দা ও তার পরিবারের সদস্যদের ৫ বিঘা জমিও দখলে আছে তার। দীঘিরপাড় এলাকায় ৪ বিঘা জমি দখলের পর গড়ে তুলেছেন বাবু মার্কেট। ঝাউগাড়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের ৫ বিঘা জমি দখলে আছে তার। বাজবী গ্রামের এক ঠিকাদারের ১৭ বিঘা জমি দখল করেছেন তিনি। ওই ঠিকাদার এখন এলাকা ছাড়া। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার কৃষ্ণাপুরা গ্রামে বাবুর আছে ৮৮ শতাংশ জমি। কৃষ্ণাপুরা ও বাজবী গ্রামে দুটি ডুপ্লেক্স বাড়ি আছে তার।

সরেজমিন আরও জানা গেছে, আড়াইহাজার, পাঁচরুকি, বাজবী, তিনগাঁও, লস্করদী, মনোহরদী, পাঁচগাঁও ও সাতগেরাম মৌজায় জমি কেনাবেচা নিয়ন্ত্রণ করেন বাবু। মূল দামের ১০ থেকে ২০ পার্সেন্ট হারে কমিশন নেন তিনি। সম্ভুপুরা ও ইজারকান্দি, কদমীচর বালুমহালসহ বিভিন্ন স্থানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তোলার কাজের নিয়ন্ত্রণও তার হাতে।

দুদকের নথি থেকে জানা গেছে, শেয়ারবাজারেও বিনিয়োগ আছে নজরুল ইসলাম বাবুর। তালিকাভুক্ত কোম্পানি বে লিজিং, গ্রামীণ-২ মিউচুয়াল ফান্ড, ইস্টার্ন হাউজিং এবং এসআইবিএলের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শেয়ার তার হাতে রয়েছে।

নথি থেকে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের হলফনামায় ২০০৮ সালে পৈতৃকভাবে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ জমি পাওয়ার কথা উল্লেখ করেন বাবু। ২০০৮ সালে তার নামে অকৃষি জমি না থাকলেও পরে ৩৭০ দশমিক ২৯ শতাংশ জমি কিনেছেন তিনি। বাজবী গ্রামে ছোট ভাইয়ের নামে ৫৪০ শতাংশ জমি কিনে পরে তা নিজের নামে লিখে নিয়েছেন।

নথি বলছে, ২০০৮ সালে জমি বা অন্য কোনও সম্পত্তি না থাকলেও ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৩৫৫ শতাংশ জমি কিনেছেন বাবুর স্ত্রী। গুলশান পোস্ট অফিসে বাবুর স্ত্রীর নামে রয়েছে ১৬ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র। মধুমতি ব্যাংকে ২০ কোটি ও ১৫ কোটি টাকার দুটি এফডিআর আছে বাবুর। ঢাকা ব্যাংকের আড়াইহাজার কালিরবাড়ী শাখায় বাবুর বড় ভাইয়ের নামে আছে ৩০ কোটি টাকার এফডিআর।

উপজেলা ও কৃষি অফিসের নথি থেকে জানা যায়, বাবু নিজেকে আড়াইহাজারের মাছ ব্যবসায়ী হিসেবে দাবি করেন। বাজারে রুই, কাতলা ও পাঙাশ মাছ বিক্রি করে ২০১৩ সালে ৪৩ লাখ ২০ হাজার টাকা লাভ করেছেন। সরেজমিন আড়াইহাজারে বাবুর মাছ ব্যবসার কোনও অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় নি।

শুধু মাছ নয়, ফুল ব্যবসাও করেন সংসদ সদস্য বাবু। আড়াইহাজার কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বাজারে রজনীগন্ধা, গাঁদা ও কাঠ বেলি ফুল বিক্রি করেন তিনি। ২০১৩ সালে ফুল বিক্রি করে তার লাভ হয়েছে ১৭ লাখ ৯৬ হাজার টাকা।

রূপগঞ্জের রূপসী মেইন রোডে ইনস্টিটিউট অব মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির ৩০ শতাংশ শেয়ারের মালিক বাবু ও তার স্ত্রী। বাবুর শাশুড়ির নামে নরসিংদীতে আছে ২৭৭ বিঘা জমি। বাবুর অবৈধ আয়ের টাকায় কেনা হয়েছে এসব জমি। সিলেটের একটি ফাইভ স্টার হোটেলের ১০ শতাংশ শেয়ারের মালিক বাবু। গাজীপুরের হোতাপাড়ায় ১৪ বিঘা জমি আছে তার।

নজরুল ইসলাম বাবুর সম্পদ বা অন্য কোনও বিষয়ে আড়াইহাজারে মুখ খুলতে চাননি কেউ। সবার মধ্যেই আতঙ্ক আর ভয়। এমনকি যাদের জমি, সম্পদ, শিল্প প্রতিষ্ঠান দখল হয়েছে, তারাও কথা বলতে নারাজ।

দায়মুক্তি ও পুনঃঅনুসন্ধান :
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। প্রথম অনুসন্ধান কর্মকর্তা ছিলেন দুদকের উপপরিচালক মো. সামছুল আলম। সামছুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে নতুন অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর নতুন অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান দুদক উপপরিচালক ওয়াকিল আহমেদ। অনুসন্ধান শেষে অব্যাহতির সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিল করেন তিনি। এই প্রতিবেদন কমিশনে গৃহীতও হয়। ২০১৮ সালের ৫ মার্চ নজরুল ইসলাম বাবুকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়।

২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের মধ্য দিয়ে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়। এরই অংশ হিসেবে ১১৮ জনের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। বিস্তারিত তথ্য জানতে বিএফআইইউর সহযোগিতা চাওয়া হয়। সহযোগিতা চেয়ে চিঠি পাঠান দুদক কর্মকর্তা সৈয়দ ইকবাল হোসেন। ১১৮ জনের ওই তালিকায় সংসদ সদস্য বাবু ও তার স্ত্রীর নাম আছে। দুদকের বিশেষ তদন্ত শাখা-২ বাবু ও তার পরিবারের সম্পদ নিয়ে অনুসন্ধান এখনো শেষ করতে পারেনি। প্রাথমিক যে প্রতিবেদন কমিশনে জমা দিয়েছেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা মশিউর রহমান, সেখানে বাবু ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা দেশ-বিদেশের সম্পদের তথ্য উল্লেখ আছে। প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বাবু, তাঁর ভাই, স্ত্রী ও আত্মীয়স্বজনের নামে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, অবৈধ সম্পদ দখল, চাকরি বাণিজ্য করে ৫১৩ কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। নামে-বেনামে এসব সম্পদ গড়া হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘আড়াইহাজারে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করা কেউ কেউ আগামী নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পেতে চান। তারাই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন। আমার নামে যেসব কথা বলা হচ্ছে, তার কোনও ভিত্তি নেই। বৈধ আয়ের বাইরে আমার কোনও সম্পদ নেই।’