চকোলেট, ল্যাপটপ ও গুঁড়ো দুধসহ দাম কমছে যেসব পণ্যের

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। প্রস্তাবিত বাজেটে নিম্নবিত্ত মানুষের কথা বিবেচনা করে কর কমানো হয়েছে বেশকিছু পণ্যের। ফলে কমতে পারে চকোলেট, ল্যাপটপ ও গুঁড়ো দুধের দাম। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে এ তথ্য জানান। 

প্রস্তাবিত বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার স্থিতিশীল রাখা ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে অন্তত ২৭ প্রয়োজনীয় পণ্য ও খাদ্যশস্য সরবরাহের ওপর উৎসে কর কমানো হচ্ছে। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এসব পণ্যে উৎসে কর ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা হচ্ছে। পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে : পেঁয়াজ, রসুন, মটর, ছোলা, চাল, গম, আলু, মসুর, ভোজ্যতেল, চিনি, আদা, হলুদ, শুকনা মরিচ, ডাল, ভুট্টা, ময়দা, আটা, লবণ, গোলমরিচ, এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ, খেজুর, তেজপাতা, পাট, তুলা, সুতা এবং সব ধরনের ফলসহ ৩০ পণ্য।

চকোলেট : প্রস্তাবিত বাজেটে চকোলেট আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হচ্ছে। 

ল্যাপটপ : আমদানিকারকদের বর্তমানে ল্যাপটপ আমদানিতে ৫ শতাংশ শুল্কসহ মোট ৩১ শতাংশ শুল্ক-কর দিতে হচ্ছে। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ এবং ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে শুল্ক-কর ৩১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ দশমিক ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। 

কম্পিউটার : কম্পিউটার ও কম্পিউটার সামগ্রী আমদানির জন্য আমদানিকারক কোনও শর্ত ছাড়াই শুধু ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রদান করে সব ধরনের কম্পিউটার ও প্রিন্টারের যন্ত্রাংশ ইত্যাদি আমদানি করতে পারে। যা প্রকৃত কম্পিউটার সামগ্রী উৎপাদকদের জন্য অসুবিধাজনক। প্রস্তাবিত বাজেটে ওই শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে।

গুঁড়াদুধ : প্যাকেটজাত গুঁড়াদুধ আমদানিতে করহার কমানো হচ্ছে। আড়াই কেজি ওজন পর্যন্ত গুড়াদুধের ওপর করহার ৮৯ দশমিক ৩২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫৮ দশমিক ৬০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে গুঁড়াদুধের বাল্ক আমদানিকারকদের জন্য মোট করহার ৩৭ শতাংশ।

নির্মাণ সামগ্রী : আবাসনসহ বিভিন্ন নির্মাণ খাতে ব্যবহৃত রড, বার ও এঙ্গেল তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ম্যাংগানিজ ব্যবহৃত হয়। বাজেটে ওই সব পণ্য আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হচ্ছে। ফলে লোহাজাতীয় পণ্যের দাম কমতে পারে।

সুইচ-সকেট :  বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত সুইচ-সকেটের দাম কমতে পারে। কারণ, দেশে উৎপাদিত সুইচ-সকেট, হোল্ডার উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামালের আমদানি শুল্ক কমানো হচ্ছে।

ইলেকট্রিক মোটর : ইলেকট্রিক মোটর উৎপাদনে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে ইলেকট্রিক মোটরের দাম কমতে পারে।

উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষণে খরচ : এভিয়েশনখাতের উত্তরণকল্পে ইঞ্জিন-প্রপেলার আমদানি পর্যায়ে মূসক কমতে পারে। এর ফলে উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষণে খরচ কমতে পারে।

মোটর সাইকেল : দেশে তৈরি মোটর সাইকেলের সিকেডি ইঞ্জিনের পার্টস আমদানির শুল্ক কমানো হচ্ছে। এ কারণে দেশে তৈরি মোটরসাইকেলের দাম কমতে পারে।

কিডনি ডায়ালাইসিসের ফিল্টার : কিডনি ডায়ালাইসিসে ব্যবহৃত ফিল্টার ও সার্কিট আমদানির শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে এক শতাংশ করা হচ্ছে। এ কারণে ডায়ালাইসিস খরচ কমতে পারে।

কার্পেট : কার্পেট তৈরির প্রধান কাঁচামাল পলিপ্রেপাইলিন ইয়ার্ন আমদানির শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে দেশে তৈরি কার্পেটের দাম কমতে পারে।

ডেঙ্গু কিট :  ডেঙ্গু রোগীদের এনএস-১ অ্যান্টিজেন পরীক্ষার খরচ সরকারি হাসপাতালের জন্য ১শ টাকা এবং বেসরকারি হাসপাতালের জন্য ৩শ টাকা নির্ধারণ করা আছে। বাজার নিয়ন্ত্রণের আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হবে।

ক্যানসার চিকিৎসার খরচ : ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধার আওতায় নতুন কিছু কাঁচামাল যোগ হচ্ছে। ফলে আশা করা যাচ্ছে ক্যানসারের চিকিৎসা খরচ কমে আসবে।