আমানত কমে গেছে শরিয়াহ্‌ভিত্তিক ইসলামী ব্যাংকগুলোর

আমানত কমে গেছে শরিয়াহ্‌ভিত্তিক ইসলামী ব্যাংকগুলোর

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন : ইসলামী ব্যাংকের ঋণে অনিয়ম আলোচনায় আসার পর ব্যাংকটির আমানত কমে গেছে। এই ধাক্কায় শরিয়াহ্‌ভিত্তিক বেশিরভাগ ব্যাংকের আমানতও কমে গেছে। গত বছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর এই তিন মাসে শরিয়াহ্‌ভিত্তিক ব্যাংকগুলোর আমানত কমেছে ১১ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা। গত ৮ বছরে শরিয়াহ্‌ ব্যাংকগুলোর আমানত কমে যাওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের শরিয়াহ্‌ভিত্তিক ব্যাংকগুলোর আমানত ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৯ হাজার ৯৪৯ কোটি টাকা, সেপ্টেম্বরে যা ছিলো ৪ লাখ ২১ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা। ফলে তিন মাসের ব্যবধানে শরিয়াহ্‌ভিত্তিক ব্যাংকগুলোর সম্মিলিত আমানত কমেছে ২ দশমিক ৭১ শতাংশ বা ১১ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা।

আমানত কমলেও ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ বেড়েছে ৪ দশমিক ৯১ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বর শেষে শরিয়াহ্‌ভিত্তিক ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ ছিলো ৩ লাখ ৮৬ হাজার ২২১ কোটি টাকা, ডিসেম্বরে তা বেড়ে হয়েছে ৪ লাখ ৫ হাজার ২০২ কোটি টাকা।  

শরিয়াহ্‌ভিত্তিক ব্যাংকগুলোতে আমানত কমার তথ্য এমন সময়ে প্রকাশিত হয়েছে, যখন দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশসহ কয়েকটি শরিয়াহ্‌ভিত্তিক ব্যাংকে ঋণ কেলেঙ্কারির অভিযোগে গ্রাহকেরা আমানত তুলে নিয়েছেন। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশেষ তারল্যসুবিধা দিয়েছে ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংককে। 

এ ছাড়া ঋণ তদারকি জোরদার করতে ইসলামী ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকে পর্যবেক্ষক বসিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি এসব ব্যাংককে ‘বাঁচাতে’ কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশেষ সুবিধা চালু করেছে।

জানতে চাইলে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা বলেন, তারল্য নিয়ে যে সমস্যা হয়েছিলো, তা অনেকটা কেটে গেছে। এখন দৈনিক ১ হাজার ৮ শ কোটি টাকা উত্তোলন হলে ২ হাজার কোটি টাকা জমা হচ্ছে। যেসব গ্রাহক টাকা তুলে নিয়েছিলেন, তাঁরা আবার টাকা জমা করছেন।

দেশের ইসলামী ধারার ব্যাংক রয়েছে ১০টি। এগুলো হলো : ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক লিমিটেড, আল-আরাফাহ্‌ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক। এসব ব্যাংকের মধ্যে আইসিবি ইসলামিক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক এবং শাহ্‌জালাল ইসলামী ব্যাংক ছাড়া অন্য সবগুলো ব্যাংকেই এস আলম গ্রুপের জালিয়াতি রয়েছে। আর এসব ব্যাংক থেকে গ্রুপটি জালিয়াতি করেছে প্রথমে শেয়ার ক্রয় করার মাধ্যমে।

উল্লেখিত ব্যাংক ছাড়া দেশের ১১টি ব্যাংকের ২৩টি শাখা ও প্রচলিত ব্যাংকের ৫৩৫টি শাখায় ইসলামী ব্যাংকিং সেবা পাওয়া যায়।