১৫ লাখ টাকা মূল্যের বাড়ি পাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধারা।

১৫ লাখ টাকা মূল্যের বাড়ি পাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধারা।
ডন প্রতিবেদক, যশোর : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি বলেছেন, আর কোনও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করতে পারবে না। একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে যাঁরা অংশ নিয়েছেন, তাঁদের সেই বীরত্ব গাথা তাঁদের কণ্ঠেই ধারণ করে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী জানুয়ারি থেকে ‘বীরদের কণ্ঠে বীরগাথা’ শিরোনামে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ধারণ শুরু হবে। এতে মুক্তিযোদ্ধারা কীভাবে যুদ্ধ করেছে, কোথায় যুদ্ধ করেছে এবং কোন স্লোগানে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন সেটা ধারণ করা থাকবে। সোমবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে যশোর বিডিহলে যশোরের ‘আঞ্চলিক বীর মুক্তিযোদ্ধা মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্‌যাপনেরঅংশ হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে যশোরে মুক্তিযোদ্ধাদের মহাসমাবেশের মাধ্যমে ‘পথে পথে বিজয়’ উদ্‌যাপন শুরু হয়েছে। অনুষ্ঠানে জেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী। আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের আগে অবজ্ঞা করা হতো, কিন্তু বর্তমান সরকার তাঁদের অনেক সম্মান দিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল সনদ ও জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল স্মার্ট আইডি কার্ড দেওয়া হবে। কেউ যাতে এটি নকল করতে না পারে, সেই কারণে বিদেশ থেকে ৮ ধরনের বারকোড সম্পন্ন স্মার্টকার্ড তৈরি করা হচ্ছে। একটি জেলা বা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের শতকরা ১৫ ভাগ অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের ১৫ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে তাঁদের একটি করে বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী বছরের ডিসেম্বরেরমধ্যে কাজ শেষ হবে। দেশের সব মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিবিজড়িত স্থান, বধ্যভূমি সংরক্ষণ করা হবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে তালিকা প্রস্তুত চলছে; সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এগুলো দ্রুত সংরক্ষণ করা হবে। আগামী প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস যাতে জানতে পারে, সে কারণে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আর মুজিব নগরে আন্তর্জাতিক মানের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি। জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়াদ্দার, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার রাজেক আহমেদ, মাহযারুল ইসলাম মন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম খয়রাত হোসেন, বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স- মুজিব বাহিনীর (বিএলএফ) বৃহত্তর যশোর জেলার উপ-অধিনায়ক রবিউল আলম, অধিনায়ক আলী হোসেন মনি, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মনির। আলোচনা শেষে যশোরের স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিবেশনায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক নাট্যাভিনয় পরিবেশনা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে দুপুরে যশোর শহরের লোন অফিস পাড়ায় এলজিইডির অর্থায়নে যশোরে ২ কোটি ৮১ লাখ ৪০ হাজার ৭৭৫ টাকা ব্যয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি। যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম আনিছুজ্জামান জানান, যশোর শহরের লোন অফিস পাড়ায় নির্মাণ করা হয়েছে ৩য় তলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স। যার বর্গফুট ৬ হাজার ৬৫০ দশমিক ৪০। এখানে রয়েছে জাতির পিতার ম্যুরাল, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, সৌরবিদ্যুৎ, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধীদের চলাচল সুবিধাসহ আধুনিক সব ব্যবস্থা। যার নির্মাণ ব্যয় ২ কোটি ৮১ লাখ ৪০ হাজার ৭৭৫ টাকা।