ডন প্রতিবেদন : পারটেক্স গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ডেনিশ ফুডস লিমিটেডের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটন করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। একইসঙ্গে ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ড. মইনুল খান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভ্যাট গোয়েন্দার সহকারী পরিচালক আলমগীর হুসেনের নেতৃত্বে একটি দল তদন্তকালে প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া গেছে। তদন্তে উদঘাটিত রাজস্ব আদায় ও আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণের জন্য মামলাটি সংশ্লিষ্ট ঢাকা পূর্ব ভ্যাট কমিশনারেট পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে সার্বিক কার্যক্রমের ওপর বিশেষ নজরদারি রাখার অনুরোধ করা হয়েছে।
ভ্যাট গোয়েন্দা জানায়, পারটেক্স গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান ডেনিশ ফুডস লিমিটেড। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রতিষ্ঠানটির অফিস হলেও কারখানাটি নারায়ণগঞ্জের শিমরাইলে অবস্থিত। ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত সময়কালের কার্যক্রম যাচাই-বাছাই করে। তদন্তকালে প্রতিষ্ঠানটির দাখিল করা দলিল ও মূসক পরিশোধ সংক্রান্ত ট্রেজারি চালান যাচাই-বাছাই করে দেখা যায়, তদন্ত মেয়াদের এক বছরে বিভিন্ন সেবা খাতের বিপরীতে উৎসে মূসক বাবদ ১২ লাখ ৬ হাজার টাকার ভ্যাট পরিশোধ করে ডেনিশ। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রযোজ্য ভ্যাট ছিলো ৩১ লাখ ৭৯ হাজার ২৭২ টাকা। এখানে অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ১৯ লাখ ৭৩ হাজার ২৭২ টাকা ফাঁকি হয়েছে। যেখানে ২ শতাংশ সুদবাবদ ২ লাখ ৩২ হাজার ৮৪৬ টাকা প্রযোজ্য।
প্রতিবেদন সূত্রে আরও দেখা গেছে, বিজ্ঞাপনের বর্ধিত মূল্যের ওপর অতিরিক্ত রেয়াত, চায়ের জন্য টি পেপার ক্রয়ে অতিরিক্ত গৃহীত রেয়াত, টি বক্সের বর্ধিত মূল্যের ওপর অতিরিক্ত গৃহীত রেয়াত, বাটারের বর্ধিত মূল্যের ওপর অতিরিক্ত গৃহীত রেয়াত, ওয়েলফারে ব্যবহৃত কার্টনের বর্ধিত মূল্যের ওপর অতিরিক্ত গৃহীত রেয়াত, নুডলসে ব্যবহৃত সিজনিং পাউডারের বর্ধিত মূল্যের ওপর অতিরিক্ত গৃহীত রেয়াত, গ্যাস ও সিঅ্যান্ডএফের বর্ধিত মূল্যের ওপর অতিরিক্ত গৃহীত রেয়াত এবং নুডলসে ব্যবহৃত কার্টনের বর্ধিত মূল্যের ওপর অতিরিক্ত গৃহীত রেয়াতসহ মোট ৬৪ লাখ ২১ হাজার ৮০৬ টাকা ভ্যাট প্রযোজ্য ছিলো। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি এক্ষেত্রে কোনও ভ্যাটই পরিশোধ করে নি।
অন্যদিকে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ উপকরণ মূল্য বাড়ায় সংশোধিত মূল্য ঘোষণা না দেওয়ায় বর্ধিত মূল্যের ওপর গৃহীত রেয়াত কর্তনে আরও ২ কোটি ৫৯ লাখ ৬২ হাজার ৪৮৪ টাকার ভ্যাট আদায়যোগ্য। সবমিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৫৭ হাজার ৫৬২ টাকা। এরসঙ্গে ২ লাখ ৩২ হাজার টাকা সুদ যোগ করলে ফাঁকি দেওয়া ভ্যাটের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ কোটি ৪৫ লাখ ৯০ হাজার ৪০৮ টাকা।
যদিও ইতোমধ্যে অপরিশোধিত ভ্যাটের অভিযোগ মেনে নিয়ে স্বেচ্ছায় ও স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রতিষ্ঠানটি ২ কোটি ৪৫ লাখ ৯০ হাজার ৪০৮ টাকা জমা দিয়েছে বলে ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে।