সিপিডি : বিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও দেশে বাড়ানো হয়েছে।

সিপিডি : বিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও দেশে বাড়ানো হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সারা বিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম কমছে, অথচ আমাদের দেশে বৃদ্ধি করা হলো। কেউ বলছে, আমাদের দেশে নাকি অন্য দেশ থেকে কম। আপনারা দেখতে পারেন, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা ছাড়া কোথাও তেলের দাম বাড়তি নেই।’

আজ বুধবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডিতে সেন্টার পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) কার্যালয়ে ‘জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এখন এড়ানো যেতো কি?’ শীর্ষক আলোচনায় এসব কথা বলে সিপিডি।

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘ভিয়েতনাম উদীয়মান অর্থনীতির একটা দেশ, অথচ দেখেন ভিয়েতনামে ডিজেলের লিটার প্রতি দাম ৯৭ দশমিক ৯ টাকা। আমরা কার সঙ্গে কী তুলনা করছি? আমরা বলছি, হংকংয়ে নাকি জ্বালানি তেলের দাম আরও বেশি। এটা ঠিক আছে। কিন্তু হংকংয়ে মাথাপিছু আয় ৪৯ হাজার ৬৬০ মার্কিন ডলার। আমাদের ২ হাজার ৫০৩ মার্কিন ডলার। সুতরাং কোনও দেশের সঙ্গে তুলনা করতে হলে, মাথাপিছু আয়ও দেখতে হবে।’

এ অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘জ্বালানি তেলের মূল্য মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেবে। যাতায়াত ব্যবস্থার খরচ বেড়ে যাবে। বাসভাড়া, ট্রাক ও লঞ্চভাড়া বেড়ে যাবে। এরই মধ্যে ভাড়া বেড়ে গেছে। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির ফলে কৃষিখাতের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। অনেক কৃষক ডিজেল চালিত পাম্প ব্যবহার করেন। কৃষি উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। কৃষি উৎপাদন কমে যাবে। ফলে আমাদের আমদানি খরচ বেড়ে যাবে। এই মূল্যবৃদ্ধি বাংলাদেশের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় ঘটনা। এটা এমন একটা সময় আসলো, যখন কিনা আমাদের অর্থনীতি বিভিন্নভাবে চাপে রয়েছে।’

ড. ফাহমিদা বলেন, ‘বিপিসি এককভাবে তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। অনেকে কোভিড থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারে নি। তার ওপরে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে সবাই চাপে পড়ছে। সাধারণ মানুষ ধাপে ধাপে নানাভাবে বিপদে পড়েছে। সাধারণ মানুষ কীভাবে বাঁচবে? যাঁরা দিন আনে দিন খায়, তাঁরা কীভাবে পোষাবে। এসব বিবেচনায় কিন্তু নেওয়া হয় নি।’

তিনি বলেন, ‘চলতি বছরে তেল বিক্রি করে ১ হাজার ২৬৪ কোটি টাকা লাভ করলেও ৮ হাজার ১৫ কোটি টাকা লোকসানের কথা বলছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)।’

‘এ ছাড়া ২০১৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা লাভ করেছে বিপিসি।’

ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক, জ্বালানি ও টেকসই উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ড. ইজাজ হোসেন; কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আনোয়ার ফারুক; সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম; যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হক চৌধুরী; বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান।