শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ।

শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ।

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলা কাগজ; রিফাত ইসলাম, ফরিদপুর : ফরিদপুরের ভাঙ্গায় নজরুল ইসলাম নামের এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষকের ক্লাস বর্জন করেছেন স্কুল শিক্ষার্থীরা। রোববার (২১ আগস্ট) সকালে উপজেলার রায়পাড়া সদরদী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি ধামাচাপার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের ধর্মীয় সহকারী শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম বাঙলা কাগজ ও ডনের কাছে দাবি করে বলেন, তিনি তাঁর ভাবীকে নিয়ে ‘জরুরি’ কাজে ঢাকায় গিয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনার অভিযোগটি মিথ্যা ও বানোয়াট। তাঁকে হেয় করতেই তাঁর প্রতিপক্ষের লোকজন ষড়যন্ত্র করছে।

সরেজমিনে স্থানীয় ও শিক্ষার্থীরা জানায়, অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম ওই বিদ্যালয়ের একজন ধর্মীয় শিক্ষক। তাঁর বিরুদ্ধে সম্প্রতি ও কয়েক বছর আগেও এলাকায় নারী কেলেঙ্কারির কয়েকটি ঘটনার অভিযোগ রয়েছে। বিদ্যালয়ের কোমলমতি মেয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তিনি অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং মেয়েদের মারধরের সময় বিভিন্ন স্থানে হাত দেন। 

তাঁর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, তিনি যে কোনও অজুহাতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারসহ তাঁদের মারধর করেন। 

এভাবে চলে আসার পর রোববার (২১ আগস্ট) সকালে ৮ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর পোশাক পরা নিয়ে গালমন্দ করেন নজরুল ইসলাম। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং তাঁর অপসারণ দাবি করেন। পাশাপাশি তাঁরা ওই শিক্ষকের ক্লাসও বর্জন করেন।

স্থানীয়রা জানান, কয়েক বছর আগেও নজরুল স্থানীয় আদী পাকা মসজিদের ইমামতি করতেন। সেখানে তিনি নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় ধরা পড়েছিলেন। গত দুই দিন আগেও নজরুল অবৈধ সম্পর্ক করে এক নারীকে ঢাকায় নিয়ে যান। যা এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি করে। 

স্কুলের লাইব্রেরি সায়েন্সের শিক্ষিকা জোৎসনা বেগম বাঙলা কাগজ ও ডনকে জানান, নজরুল স্যারের বিরুদ্ধে স্কুল শিক্ষার্থীদের অভিযোগ যুক্তিসঙ্গত।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান মোস্তফা বাঙলা কাগজ ও ডনকে জানান, নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক কোনও প্রমাণ পাওয়া যায় নি। তবে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তের জন্য বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও স্কুল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নজরুলকে আগামী ৭ দিনের জন্য ছুটি দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও-ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার ভূমি মো. মাহামুদুল হাসান বাঙলা কাগজ ও ডনকে জানান, এ বিষয়ে তিনি কোনও লিখিত অভিযোগ পান নি। তবে অভিযোগ পেলে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়ারুল ইসলাম বাঙলা কাগজ ও ডনকে জানান, বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীসহ স্কুল সংশ্লিষ্ট কয়েকজন একটি প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করছেন এমন সংবাদের ভিত্তিতে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছায় এবং সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পরবর্তীতে সে বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে সমাধান হওয়ার কথা তিনি শুনেছেন।