লবণ আমদানির সিদ্ধান্তে হতাশ চাষিরা।

লবণ আমদানির সিদ্ধান্তে হতাশ চাষিরা।
ডন প্রতিবেদক, কক্সবাজার : সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে ৩ লাখ ১৬ হাজার মেট্রিক টন লবণ আমদানি করা হবে। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে লবণ আমদানির এ সিদ্ধান্তে হতাশ কক্সবাজারের লবণ চাষিরা। চাষিরা যখন মাত্রই উৎপাদনের জন্য মাঠে নেমেছেন, ঠিক তেমন সময়ে বিদেশ থেকে লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা। লবণ আমদানির সিদ্ধান্তের বিষয়টি বাংলা কাগজ এবং ডনকে নিশ্চিত করেছেন মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক ও কক্সবাজার বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জাফর ইকবাল ভুঁইয়া। তাঁরা জানান, সরকারের লবণ আমদানির সিদ্ধান্তটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এখনো প্রক্রিয়াধীন। জানা গেছে, লবণের আমদানির কথা শুনলেই স্বাভাবিকভাবে হতাশ হয়ে পড়েন চাষিরা। এক্ষেত্রে তাঁদের ঘুম হারাম হয়ে যায়। আবার মৌসুমের শুরুতে আমদানির সিদ্ধান্তের কথা শুনলেই চাষিরা আর মাঠে নামতে চান না। তাঁদের যুক্তি হচ্ছে, বিদেশ থেকে লবণ আমদানি করা হলে দেশীয় উৎপাদিত লবণের দাম পড়ে যায়। তখন চাষিরা তাঁদের উৎপাদিত লবণ বিক্রি করে ন্যায্য মূল্য পান না। টেকনাফের সাবরাং এলাকার এক লবণ চাষি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা কাগজ এবং ডনকে বলেন, ‘টেকনাফ থেকে শুরু করে কুতুবদিয়াসহ উপকূলের চাষিরা লবণ চাষের জন্য মাঠে নেমেছেন। সাবরাং এলাকায় আগামী সপ্তাহে মাঠের নতুন লবণ বাজারে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। সবমিলিয়ে তাই লবণ আমদানি কোনোভাবেই কাম্য নয়। সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক বাংলা কাগজ এবং ডনকে বলেন, ‘লবণের বিষয়টি আমাদের এলাকার জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল। চাষিরা দাম না পেলে যেমনি সরকারের উপর নাখোশ হন, তেমনি আবার বাজারে কোনও কারণে সঙ্কট সৃষ্টি হলেও দোষ পড়ে সরকারের ঘাড়ে। তাই সরকার এ বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন রয়েছে। ‘সরকার জাতীয় স্বার্থকেই গুরুত্ব দিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। তবে আমি মনে করি, মৌসুম শেষেই এমন সিদ্ধান্তটি সরকার নিতে পারতো।’ কক্সবাজার বিসিকের উপ মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জাফর ইকবাল ভুঁইয়া বাংলা কাগজ এবং ডনকে বলেন, ‘চলতি মৌসুমে সরকার লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আরও এক লাখ বাড়িয়ে ২৩ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত করেছে। গেলো বছর এ লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২২ লাখ মেট্রিক টন। তবে গত মৌসুমে উৎপাদন হয়েছিলো মাত্র ১৬ মেট্রিক টন। ভাগ্যিস আগের বছরের উদ্বৃত্ত ৩ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন ছিলো বিধায় কোনও রকমে মৌসুম শেষ করা গেছে কোনও রকম আমদানি ছাড়াই। তিনি জানান, গত ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত মাঠ পর্যাযে লবণের মওজুদ রয়েছে প্রায় দেড় লাখ মেট্রিক টন। তাই মৌসুম শুরু হলেও উৎপাদন ব্যাহত হবার আশঙ্কায় তিন লাখ ১৬ হাজার মেট্রিক টন লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত সরকার নিয়ে রেখেছে। তাও সেই লবণ দেশে আসতে জানুয়ারি মাসের শেষ হয়ে যেতে পারে।