নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : তাপপ্রবাহের কারণে বিদ্যুৎ সঙ্কট বাড়তে থাকায় কয়লার সরবরাহ এখন দ্বিগুণ করার দিকে ঝুঁকছে ভারত। এ লক্ষ্যে দেশটি ১ শরও বেশি কয়লা খনি ফের চালুর পরিকল্পনা করছে, যে খনিগুলো অর্থনৈতিক দিক থেকে টেকসই নয় বলেই একসময় ভাবা হয়েছিলো।
ভারতে কয়েক দশকের মধ্যে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে এপ্রিলে বিদ্যুতের চাহিদা রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। ৬ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে গত মাসে এয়ারকন্ডিশনের ব্যবহার বেড়ে বিদ্যুৎ সঙ্কট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সম্প্রতি কয়েকদিনে তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও আবার দ্রুতই তা বাড়ার পূর্বাভাস আছে।
কয়লা খনিতে প্রাইভেট কোম্পানিগুলোকে আরও বেশি আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের কয়লা সচিব অনিল কুমার জৈন বলেন, আগে জীবাশ্ম জ্বালানি উন্নয়নের জন্য তাঁদেরকে কটু কথা শুনতে হয়েছে। আর এখন এই জ্বালানি যথেষ্ট সরবরাহ করা হচ্ছে না বলে খবর বেরুচ্ছে। এই পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে মন্ত্রণালয় এবং কোল ইন্ডিয়ার পক্ষে দ্রুত বেশি পরিমাণে কয়লা সরবরাহ করা খুবই সাহসী পদক্ষেপ।
জৈন বলেন, কয়লা উৎপাদন, আমদানি এবং ব্যবহারের দিক থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ ভারত এখন পুনরায় চালু কয়লাখনিগুলো থেকে আগামী দুই-তিন বছরে অতিরিক্ত ৭ কোটি ৫০ লাখ থেকে ১০ কোটি টন জ্বালানি পাওয়ার আশা করতে পারে।
ভারতে এ বছর ৩১ মার্চ নাগাদ এই জ্বালানি উৎপাদন হয়েছে ৭৭ কোটি ৭২ লাখ টন, আর জ্বালানি ব্যবহার হয়েছে ১শ কোটি টনেরও বেশি। ভারতের বিদ্যুৎমন্ত্রী গতমাসে রাজ্যগুলোকে আগামী তিনবছর কয়লা আমদানি করে যেতে বলেছেন। দেশের আভ্যন্তরীন কয়লা ঘাটতি পূরণ এবং বাড়তি চাহিদা মেটাতে তিনি এই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন।
বিদ্যুৎমন্ত্রণালয়ও কয়েকটি অলস পড়ে থাকা কয়লা প্ল্যান্টে কাজ শুরুর জন্য একটি জরুরি আইন চালুর আহ্বান জানিয়েছেন। ভারতের রাষ্ট্র-পরিচালিত সবচেয়ে বড় কয়লা খনি কোম্পানি কোল ইন্ডিয়া কোলএনএস দেশের ৮০ শতাংশ জ্বালানির জোগান দেয়। তাঁরা বার্ষিক উৎপাদন ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে ২০২৪ সাল নাগাদ ১ শ কোটি টন জ্বালানি উৎপাদন করতে চাইছে।
তা ছাড়া, সৌর ও বায়ু থেকেও আরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের বড় ধরনের পরিকল্পনা আছে ভারতের। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উন্নয়নশীল দেশ ভারত এখনও কয়লা থেকে সরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত নয়।