বাড়ি ছেড়ে যাওয়া ৪ জনসহ গ্রেপ্তার ৭ জন নতুন জঙ্গি সংগঠনের সদস্য : র্যাব
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন : জঙ্গিবাদে জড়িয়ে কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাড়ি ছেড়ে যাওয়া চারজনসহ মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। র্যাব বলছে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ নামে একটি নতুন জঙ্গি সংগঠনের সদস্য।
বুধবার (৫ অক্টোবর) রাতে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকা থেকে এই সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় র্যাব। সংস্থাটি বলছে, র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১১-এর অভিযানে তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
আজ বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
র্যাব বলছে, গ্রেপ্তার সাতজন হলেন ইমতিয়াজ আহমেদ ওরফে রিফাত (১৯), মো. হাসিবুল ইসলাম (২০), হোসাইন আহম্মদ (৩৩), মো. নেছার উদ্দিন ওরফে উমায়ের (৩৪), বনি আমিন (২৭), রোমান শিকদার (২৪), মো. সাবিত (১৯)। এর মধ্যে ইমতিয়াজ ও হাসিবুলের বাড়ি কুমিল্লায়। হোসাইন, নেছার, বনি ও সাবিতের বাড়ি পটুয়াখালীতে। রোমানের বাড়ি গোপালগঞ্জে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে নতুন জঙ্গি সংগঠনটির কর্মপদ্ধতি, প্রচারপত্র, বিস্ফোরক তৈরির নির্দেশিকা, উগ্রবাদী বই ও ভিডিওসহ ট্যাব উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব বলছে, হোসাইন পটুয়াখালীর একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। তাঁর ভাষ্যমতে, নিষিদ্ধঘোষিত বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন থেকে কতিপয় সদস্যদের একীভূত করে ২০১৭ সালে নতুন জঙ্গি সংগঠনটির কার্যক্রম শুরু হয়।
এই দলে জেএমবি, আনসার আল ইসলাম ও হুজির বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য রয়েছেন। ২০১৯ সালে সংগঠনটির নামকরণ করা হয় ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’। হোসাইন সংগঠনের সদস্য সংগ্রহ ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বিভিন্ন তাত্ত্বিক জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সদস্যদের সশস্ত্র হামলার বিষয়ে প্রস্তুত করে তুলতেন।
নেছার ভোলায় একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি ২০১৯ সালের আগে উগ্রবাদী কার্যক্রমে যুক্ত হন। তিনি হিজরত করা সদস্যদের প্রশিক্ষক ও তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে ছিলেন। তিনিও বিভিন্ন তাত্ত্বিক জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সদস্যদের সশস্ত্র হামলার বিষয়ে প্রস্তুত করে তুলতেন।
বনি উচ্চমাধ্যমিক পাস করে পটুয়াখালীতে ব্যবসা করতেন। তিনি ২০২০ সালে হোসাইনের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েন। তিনি সদস্যদের আশ্রয় ও তত্ত্বাবধানের কাজ করতেন।
রিফাত অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতকে অধ্যয়নরত। হাসিব উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে অধ্যয়নরত। তিনি একটি অনলাইন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁরা গত ২৩ আগস্ট বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হন। তাঁরা কুমিল্লার একটি মসজিদের ইমামের কাছ থেকে নতুন সংগঠনের বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা পান।
রোমান গোপালগঞ্জে ইলেকট্রিক ও স্যানিটারির কাজ করতেন। তিনি অনলাইনে বিভিন্ন ভিডিও দেখে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হন। স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে তিনি সংগঠন সম্পর্কে ধারণা পান। প্রায় এক মাস আগে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হন।
সাবিত উত্তরা এলাকায় একটি ছাপাখানায় স্টোররক্ষকের কাজ করতেন। তিনি তাঁর এক আত্মীয় ও অনলাইনে ভিডিও দেখে উগ্রবাদে অনুপ্রাণিত হন। প্রায় এক মাস আগে তিনি নিখোঁজ হন।