বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস আজ : রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী।
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : আজ ২৮ জুলাই, বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস। দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস -২০২২’ পালনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। হেপাটাইটিস প্রতিরোধে এবারের বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসের প্রতিপাদ্য ‘Hepatitis, Can’t Wait’ অর্থাৎ ‘হেপাটাইটিস, আর অপেক্ষা নয়’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।
মানবদেহে লিভার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। লিভারের রোগ ও প্রতিরোধ সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে সঠিক ধারণা না থাকায় এবং এ রোগে সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ না করায়, দেশে লিভার রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। লিভারের বিভিন্ন রোগের মধ্যে হেপাটাইটিস অন্যতম। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অনিরাপদ রক্ত সঞ্চালন ও মাদকাসক্তি হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাস সংক্রমণের প্রধান কারণ। হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসে আক্রান্তদের পরিপূর্ণ চিকিৎসা পদ্ধতি এখনও আবিষ্কৃত হয় নি। শুধু সচেতনতার মাধ্যমে হেপাটাইটিস বহুলাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই এসব রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয় ও বর্জনীয় সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
লিভারের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা ক্ষেত্রবিশেষে অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও জটিল হয়ে থাকে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার মতো এসব রোগের আধুনিক ও উন্নত চিকিৎসাও বিকাশ লাভ করছে। বাংলাদেশেও এখন লিভার প্রতিস্থাপনসহ লিভারের বিভিন্ন জটিল রোগের উন্নত চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। তবে হেপাটাইটিস সংক্রমণ প্রতিরোধে সকলকে জীবনযাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রে যথাযথ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী হেপাটাইটিস নির্মূলের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আমি আশা করি, সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টায় এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।
আমি ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস-২০২২’ উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সফলতা কামনা করি।
জয় বাংলা।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।
প্রধানমন্ত্রীর বাণী : বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। হেপাটাইটিস প্রতিরোধে বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘Hepatitis, Can't Wait’ অর্থাৎ ‘হেপাটাইটিস, আর অপেক্ষা নয়’, অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা একটি গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করেছি এবং এই নীতির বাস্তবায়ন করছি। আমরা নতুন নতুন মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, নার্সিং কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট, মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল এবং হেলথ টেকনোলজি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছি। সাধারণ হাসপাতাল ও বিশেষায়িত হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ও চিকিৎসা সেবা বহুগুণে বৃদ্ধি করেছি। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে সাড়ে আঠারো হাজার কমিউিনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। আমাদের গৃহীত নানামুখী পদক্ষেপে স্বাস্থ্যখাতে যথেষ্ট উন্নতি সাধিত হয়েছে। শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে, বেড়েছে দেশের মানুষের গড় আয়ু।
হেপাটাইটিস এখনই নির্ণয় করতে পরীক্ষা করতে হবে। বিশ্বে হেপাটাইটিস ভাইরাস বহনকারী প্রতি ১০ জনে ৯ জনই জানেন না যে, তিনি হেপাটাইটিস ভাইরাসে আক্রান্ত। ব্যাপক গণসচেতনতার মাধ্যমে জনগণকে এই বিষয়ে সচেতন করতে হবে। আমাদের চিকিৎসক সমাজকে আরও বেশি সেবার মনোভাব নিয়ে সাধারণ মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী হেপাটাইটিস নির্মূলের লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। যা বাস্তবসম্মত এবং আমাদের সকলের প্রচেষ্টায় তা অর্জন করা সম্ভব।
দেশে হেপাটাইটিস প্রতিরোধে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি ব্যক্তি, সংস্থা, প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। আমি দেশবাসীকে আহ্বান জানাই, আপনারা এ মহামারি মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন এবং হেপাটাইটিস প্রতিরোধে আরও সচেতন হোন।
আমি ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস ২০২২’- এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।