বাংলাদেশ-ভারতের বাণিজ্য বাড়াতে ভূমিকা রাখবে রেলওয়ে পরিবহন

বাংলাদেশ-ভারতের বাণিজ্য বাড়াতে ভূমিকা রাখবে রেলওয়ে পরিবহন

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন : ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যমে পণ্য আনা-নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশটির জন্য যে ন্যাশনাল লজিস্টিকস নীতির ঘোষণা দিয়েছেন, তার আলোকে এ রেলওয়ে ওয়াগন চলাচলের কাজ শুরু হয়েছে।

সড়কপথে পণ্য আনায়নের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যাগুলো দূর করতেই এ নীতিমালা ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশি কোম্পানি এমজিএক্স ডটকম এক্সপ্রেস প্রাইভেট লিমিটেড ভারতীয় কোম্পানি কন্টেইনার কোম্পানি অব ইন্ডিয়া যৌথভাবে প্রথম রেলওয়ে ওয়াগনটি পরিচালনা করে। এটি ভারতের হরিয়ানার কাতুবাস আইসিডি থেকে বাংলাদেশের বেনাপোল পর্যন্ত বিভিন্ন পণ্য নিয়ে আসে। প্রথমদিন ৪০ ফুট কনটেইনারের সমান ৩০টি ওয়াগন এসে পৌঁছায়।

জানা গেছে, ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রথমদিন যেসব কোম্পানির পণ্য আসে, তার মধ্যে হিরো মোটো কর্প এবং প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বল (পিঅ্যান্ডজি) এর পণ্য অন্যতম। 

উল্লেখ্য, এমজিএক্স ডটকম বাংলাদেশের এমজিএইচ গ্রুপের একটি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান। দুই দেশের আমদানি রপ্তানিতে সুবিধার জন্য প্রতিষ্ঠানটি দিল্লি, হরিয়ানা এবং রাজস্থানের সঙ্গে বাংলাদেশের ট্রেন যোগাযোগ স্থাপনে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালে ভারত এবং বাংলাদেশে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ট্রেন সার্ভিস চালু করেছিলো। বর্তমানে বাংলাদেশ ভারতের চতুর্থ বৃহৎ রপ্তানি পণ্যের বাজার। বর্তমানে ভারতের আমবালা, ইনডোর, মান্দিদীপ এবং কোলকাতা পর্যন্ত এমজিএক্স ডটকমের রেল সার্ভিস চালু রয়েছে। 

রেল সার্ভিসের মাধ্যমে পণ্য পরিবহন পরিবেশবান্ধব উল্লেখ করে এমজিএইচ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আনিস আহমেদ বলেছেন, সড়কপথে পণ্য পরিবহন করলে, তাতে রেলওয়ের চাইতে পাঁচগুণ বেশি কার্বন নিঃসরণ হয়। ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট কমিটির (এনটিডিপিসি) সাম্প্রতিক রিপোর্টে বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে। 

তিনি বলেন, এমজিএইচ গ্রুপ শিল্পে পরিবেশবান্ধব টেকসই পরিবহন ব্যবস্থা চালু করেছে। রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যমে পণ্য পরিবহন সেবা চালু করার মাধ্যমে এমজিএইচ গ্রুপ তাঁদের প্রতিশ্রুতি আরও একধাপ এগিয়ে নিলো। 

হিরো মোটো কর্পের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জয়ৎসেনা সাগর বলেছেন, আগে সড়কপথে পণ্য পরিবহনে নানা ধরনের ঝামেলা পোহাতে হতো। নানা কারণে পণ্য পৌঁছাতে দেরি হতো। আমরা একটি বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজছিলাম। রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনে সময় এবং ঝামেলা দুটি থেকেই মুক্তি মিলেছে। 

এমজিএইচ গ্রুপ ইন্ডিয়ার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিমাংশু প্যান্ট এ বিষয়ে বলেন, দ্রুত পণ্য পাঠাতে গেলে রেলওয়ে পরিবহন একটি উত্তম ব্যবস্থা। এটি অর্থনৈতিকভাবেও সাশ্রয়ী। টেক্সটাইলসহ অন্যান্য দামি পণ্য রেলওয়ে কনটেইনারে পরিবহনের ফলে নিরাপত্তার বিষয়টিও সুদৃঢ় হয়। চুরি কিংবা জিনিস নষ্ট হবারও ভয় থাকে না। বিভিন্ন রপ্তানিকারকদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে এমজিএক্স ডটকম দিল্লি থেকে বেনাপোল পর্যন্ত সাপ্তাহিক ট্রেন সার্ভিস চালুর পরিকল্পনা করছে। বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রেও ট্রেন সার্ভিস ভালো ভূমিকা রাখবে বলে হিমাংশু প্যান্ট জানান।