বাংলাদেশে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০৫! কারফিউ জারি করা হলো এবার

বাংলাদেশে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০৫! কারফিউ জারি করা হলো এবার

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : ছাত্রবিক্ষোভে উত্তাল বাংলাদেশ। নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০৫। এখনও পর্যন্ত সেই পরিসংখ্যানই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি। এর মাঝে সীমান্ত পেরিয়ে দলে দলে ভারতে ফিরে যাচ্ছেন বাংলাদেশে পাঠরত দেশটির পড়ুয়ারা। ত্রিপুরা, মেঘালয় এবং পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে ভারতে ঢুকছেন তাঁরা। শুক্রবার (১৯ জুলাই) রাত থেকে বাংলাদেশে জুড়ে কারফিউ জারি করা হয়েছে। বিক্ষোভ পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয়েছে সেনাবাহিনীও।

বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ত্রিপুরা এবং মেঘালয় দিয়ে শুধু শুক্রবারই ভারতে ফিরেছেন ৩০০'র বেশি ভারতের পড়ুয়া। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও না কোনও কোর্স করছিলেন তাঁরা। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। তাই আপাতত দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন। শুক্রবার রাতে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত পেরিয়েও ভারতে ঢুকেছেন বেশ কয়েকজন। অনেক বিদেশি ছাত্রছাত্রীও ভারত হয়ে দেশে ফিরছেন।

শুক্রবার (১৯ জুলাই) ত্রিপুরা, মেঘালয় হয়ে যাঁরা দেশে ফিরেছেন, তাঁদের বেশিরভাগই উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, মেঘালয়, জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা। দেশে ফেরার জন্য মূলত দু’টি রাস্তা ধরেছিলেন তাঁরা। এক দল ফিরেছেন ত্রিপুরায় আগরতলার কাছে আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে। অন্য দল মেঘালয়ের দাওকী স্থলবন্দর হয়ে ভারতে ঢুকেছেন।

বাংলাদেশে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ছাত্রবিক্ষোভ চলছে। গত সোমবার থেকে ক্রমে যার ঝাঁজ বাড়তে শুরু করেছে। ওইদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঝামেলা শুরু হয় এবং মঙ্গলবার পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে ছ’জনের মৃত্যু হয়। তার পর থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলন মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে বাংলাদেশের নানা প্রান্তে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশের জুড়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। প্রায় প্রতি দিনই লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এর মাঝে শুক্রবার দেশজুড়ে কারফিউ জারি করে হাসিনা সরকার। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হওয়ায় নামানো হয় সেনা।

ভারতে ফেরা ছাত্রেরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। প্রথমে আন্দোলনের মাঝে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেও তাঁরা কিছু দিন থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমে হাতের বাইরে বেরিয়ে যায় বলে জানান তাঁরা। এক সময়ে পরিস্থিতি এমন হয় যে, ভারতে পরিবারের সঙ্গেও তাঁরা যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। নানা বিধিনিষেধ আরোপিত হয়েছিলো। তার পরেই দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন সকলে। যোগাযোগ করা হয় ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে। বিক্ষোভের মাঝে বাংলাদেশে ট্রেন, মেট্রো পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সড়কপথে গাড়ি করে সীমান্ত পেরিয়েছেন ভারতের পড়ুয়ারা।