প্রেমের জালে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া মৌসুমীর নেশা!

প্রেমের জালে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া মৌসুমীর নেশা!

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলার কাগজ ও ডন; লিয়াকত হোসেন, রাজশাহী : নিজে এবং তাঁর পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন মিলে প্রেমের জালে ফেলে মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেন। ওই নারীর নাম মৌসুমী বেগম।

জানা গেছে, রাজশাহী নগরীর বহরমপুর এলাকার বাসিন্দা মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে  ব্যবসায়ী মাসুদ রানা মিল্টনের কাছ থেকে নানা অজুহাতে নগদ ১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর বিভিন্ন সময় মামলা তুলে নেবে বলে আরও ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন রাজশাহীর পবা উপজেলার বসুয়া এলাকার বাসিন্দা মুক্তার আলীর মেয়ে মৌসুমী বেগম। 

এ অবস্থায় ‘প্রেমের জালে ফেলে বিয়ের প্রলোভনে প্রতারণা করা মৌসুমীর নেশা’- এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মাসুদ রানা।

ভুক্তভোগী মাসুদ রানা বলেন, আমার সঙ্গে দোকানে মোবাইল রিচার্জ করার মাধ্যমে তাঁর পরিচয়। দোকানে যাতায়াত বাড়তে থাকার এক পর্যায়ে তাঁর সঙ্গে প্রেম-ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি।

‘এক পর্যায়ে মৌসুমী আমাকে অনৈতিক  কর্মকাণ্ডের কথা জানান। তাঁকে বিয়ে করলে সব অনৈতিক কর্মকাণ্ড ছেড়ে সংসার করবে বলে সম্মতি পোষণ করে।’

‘এবং পরবর্তীতে জেলা রাজশাহী নোটারী পাবলিকের নিকট বিবাহ পরবর্তীতে অনৈতিক কাজে জড়িত হবে না মর্মে সে আমার সঙ্গে একটি অঙ্গীকারনামা সম্পাদন করে।’

‘পরবর্তীতে সে আবারও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ে। আর আমি জানতে পারার পর, সে স্বেচ্ছায় আমাকে তালাক প্রদান করে। এর কিছুদিন পরে তালাকনামার কাগজ আসলে আমি স্বাক্ষর প্রদান করি।’

‘এ ঘটনার জের ধরে আমার সম্মান ক্ষুণ্ন করার জন্য মিথ্যা মামলা দায়ের করে মৌসুমী। এরপর থেকে চলে আমার উপর অমানবিক নির্যাতন। আমার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময় লোকজন দিয়ে মারধর করে বিকাশ এজেন্ট থেকে জোর করে টাকা বের করে নিয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন সময় হয়রানি করে আসছে সে।’

‘বিভিন্ন সময় মোবাইলে ফোন দিয়ে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে যে, ১০ লাখ টাকা না দিলে আরও কঠিন মামলা দেবে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেলো, প্রথমে প্রবাসীর স্ত্রী পরিচয়ে প্রেম, তারপর বিয়ে অতঃপর প্রতারণা করে অনেকের কাছ থেকে টাকা ও সম্পদ হাতিয়ে নিয়েছে এই মৌসুমী বেগম।

শুধু ব্যবসায়ী মাসুদ রানা মিল্টনের নয়, তাঁর এমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন আরও অনেকেই। 

প্রতারণার কাজে মৌসুমী একাই নন, তাঁর সঙ্গে সহযোগির ভূমিকায় ছিলেন তাঁর মা বিউটি বেগম, তাঁর ফুপু শিলা ওরফে সুমি ও অজ্ঞাত পরিচয়ে কয়েকজন যুবক। তাঁরা ব্যবসায়ী ও অর্থ বিত্তশালীদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সম্মিলিতভাবে প্রতারণা করে আসছেন।

অনুসন্ধানে এ চক্রের সঙ্গে মৌসুমীর কয়েকজন আত্মীয়ের জড়িত থাকার সত্যতা পাওয়া গেছে। 

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে , মৌসুমী এর আগেও গত বছর বিয়ের ফাঁদ পেতে এক ক্লিনিক ব্যবসায়ীর সঙ্গেও প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

তারও আগের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে মৌসুমী তাঁর প্রথম স্বামী আনোয়ার হোসেনকে তালাক দেন। তাঁকে তালাক দেওয়ার পরই এক প্রবাসীকে বিয়ে করেছেন।

প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক পরে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের মাধ্যমে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করে থাকেন তিনি।

ভুক্তভোগী মাসুদ রানা মিল্টন বলেন, মৌসুমী আমার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী। গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে শিলা বেগমের মাধ্যমে আমাকে মামলা তুলে নিয়ে সব কাগজ বুঝিয়ে দেওয়ার কথা বলে লক্ষ্মীপুরে এক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রতারণার জন্য ডেকে নেয়। এবং সেখানে আমাকে আটকে রেখে ৩ শ টাকার ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করানোর চেষ্টা করে। 

‘সে সময়ে কোনও রকম প্রাণ নিয়ে ফিরে আসি। পরে আবারও অজ্ঞাত লোক দিয়ে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর চালিয়ে অনেক ক্ষতি সাধন করেন।’

সেই থেকে ভুক্তভোগী মিল্টন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেই জানালেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য মৌসুমী বেগমের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেন নি বলে বাঙলার কাগজ ও ডন তাঁর মত জানতে পারে নি।