টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা : আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে মাইকিং

টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা : আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে মাইকিং

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলার কাগজ ও ডন; রাঙামাটি : গত দুই দিনে একটানা বৃষ্টির কারণে রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে রাঙামাটি শহরে ২৯টি স্থানকে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান হিসেবে চিহ্নিত করে ২৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের সর্তকতামূলক মাইকিংসহ শুক্রবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৫টার মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

জানা গেছ, রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় লোকজন বসবাস করছেন। গত দুইদিন ধরে টানা বর্ষণের কারণে এসব স্থানে ধসের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শহরের রিজার্ভ বাজার এলাকার চম্পানির মার টিলা, চেংগিমুখ, আব্দুল আলী একাডেমি সংলগ্ন ঢাল, এসপি অফিস সংলগ্ন ঢাল, মাতৃমঙ্গল এলাকা ঢাল, পুলিশ লাইন সংলগ্ন ঢাল। 

তবলছড়ি এলাকার মধ্যে এডিসি হিল সংলগ্ন রাস্তার ঢাল, দুর্নীতি দমন কমিশন অফিস সংলগ্ন ঢাল, ওয়াপদা কলোনির ঢাল, স্বর্ণ টিলা, বিএডিসি পাহাড়ের ঢাল। 

বনরুপা এলাকার মধ্যে দেওয়ান পাড়া পাহাড়ের ঢাল, কাঠালতলী মসজিদ কলোনি পাহাড়ের ঢাল, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সংলগ্ন পাহাড়ের ঢাল, আলম ডক পাহাড়ের ঢাল, গর্জনতলী মুখ, চম্পক নগর এলাকার পাহাড়ের ঢাল, পাবলিক হেলথ এলাকা পাহাড়ের ঢাল। 

ভেদভেদী এলাকার মধ্যে রয়েছে মুসলিম পাড়া পাহাড়ের ঢাল, রাজমনি পাড়া পাহাড়ের ঢাল, পোস্ট অফিস কলোনি এলাকা, নতুন পাড়া, শিমুলতলী, রূপনগর, বিদ্যানগর, লোকনাথ মন্দির এলাকা, কিনারাম পাড়া, সিলেটি পাড়া, আলুটিলা ও আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ের ঢাল। 

এসব এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে প্রায় ১৫ হাজারেরও বেশি পরিবার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছে।

এদিকে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসরত লোকজনদের সচেতন করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্তক থাকার নির্দেশনামূলক মাইকিং করার পাশাপাশি নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরে যেতে অনুরোধ করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ৯ ওয়ার্ডে ২৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি স্কাউটসের সদস্যরা চেষ্টা চালাচ্ছেন। 

শুক্রবার সকালের দিকে জেলা প্রশাসক মোশাররফ হোসেন খান পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মারুফ আহম্মদ, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল আমিনসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোশাররফ হোসেন খান বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেন, জেলা প্রশাসনের চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের শুক্রবার বিকেল ৫টার মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে পাহাড় ধস থেকে রক্ষা পেতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলার অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসনের একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসন ছাড়াও স্কাউটস, রোভার স্কাউটস, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশসহ অনেক সংস্থা দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।