জনতা জেগে উঠেছে, সরকারের পতন কেউ ঠেকাতে পারবে না : ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলার কাগজ ও ডন; খুলনা : আন্দোলনের মধ্য দিয়েই সরকারের পতন ঘটনো হবে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,‘জনতা জেগে উঠেছে, সরকারের পতন কেউ ঠেকাতে পারবে না। আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
শনিবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে খুলনা মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র ডাকবাংলো মোড়ের সোনালী ব্যাংক চত্বরে আয়োজিত দলের খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সংসদ বিলুপ্ত করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের দাবি জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘এই দেশে এই সরকারের অধীনে কোনও নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। কারণ এই সরকার জানে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তাঁদের কোনও চিহ্ন থাকবে না, তাঁরা ১০টি আসনও পাবে না।’
শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা জনগণের ম্যানডেট নিয়ে ক্ষমতায় আসেন নাই। সংসদ বিলুপ্ত করুন। সংসদ বিলুপ্ত করে আপনারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিন। কারণ এই দেশে আপনাদের অধীনে কোনও নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হতে পারে না, সেই কারণে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ছাড়া আর কোনও ব্যবস্থাই জনগণ মেনে নেবে না।’
তিনি বলেন, গত তিনদিনে পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হাজারো নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে। চুকনগরে বিএনপির নেতাকর্মীদের গুলি করা হয়েছে, কেশবপুরে ১৫ জন গুলিবিদ্ধ, মোংলা থেকে আসার সময় কয়েকজন নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে। রূপসা, তেরখাদা, দিঘলিয়ার ১ শ নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে। খালিশপুর, দৌলতপুর, খানজাহান আলী থানার নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে। বাগেরহাটে ৭০ জনের মতো নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে, ৫০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৬ নম্বর, ৭ নম্বর ঘাটে ট্রলার ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে, খুলনা রেলস্টেশনে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। গাজীরহাটে একজন কর্মী পানিতে ডুবে গেছে এখনো তাঁকে পাওয়া যায় নি। রূপসা ঘাটে হামলা হয়েছে, জেলখানা ঘাটে হামলা হয়েছে।’
গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা। বক্তব্য দেওয়ার মাঝপথে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি চেয়ারে বসে বক্তব্য দেন।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, মশিউর রহমান, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, কামরুজ্জামান রতন, রকিবুল ইসলাম বকুল, ড. ওবায়দুল ইসলাম, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, কৃষিবিদ শামিমুর রহমান, অমলেন্দু দাস অপু, নৈওয়াজ হালিমা আরলি, আমিরুল ইসলাম খান শিমুল, সাদেক খান, এস এম জিলানী, শহীদুল ইসলাম বাবুল, অধ্যক্ষ নার্গিস বেগম, ফজলুর রহমান খোকন এবং ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণসহ অন্যান্যরা।
এ সময় মঞ্চে ইশরাক হোসেন, মফিকুল হাসান তৃপ্তি, হেলেন জেরিন খানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা বিভাগীয় বিএনপির সমাবেশ পরিচালনা করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুদরতই-আমীর এজাজ খান, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহীন এবং জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী।